অসহায়: কলেজ স্ট্রিটে ম্যানহোল সাফাই করছেন এক কর্মী। নিজস্ব চিত্র
এ রাজ্যে মানবাধিকার কমিশন কী জন্য রয়েছে, সোমবার সেই প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বিচারপতির আরও প্রশ্ন, ‘‘অবসরের পরেও কিছু ব্যক্তিকে বাড়তি সুযোগ দেওয়ার জন্যই তাঁদের মানবাধিকার কমিশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়? নাকি কারও অধিকার খর্ব হলে তিনি যাতে সুবিচার পান, তা নিশ্চিত করাই কমিশনের কাজ?’’ রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের একটি সুপারিশ না-মানা সংক্রান্ত মামলায় এই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যঙ্গচিত্র পোস্ট করার অভিযোগে ২০১২ সালে গ্রেফতার করা হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অম্বিকেশ মহাপাত্র-সহ দু’জনকে। গ্রেফতারিতে তাঁদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে, এই অভিযোগ জানিয়ে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হন ওই শিক্ষক। কমিশনের সুপারিশ সত্ত্বেও রাজ্য অম্বিকেশবাবুদের ক্ষতিপূরণ দেয়নি। তাঁদের গ্রেফতারির পিছনে যে-দুই পুলিশ অফিসারের হাত ছিল, তাঁদের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্তের সুপারিশ করে কমিশন। সুপারিশ না-মানায় অম্বিকেশবাবুরা হাইকোর্টে মামলা করেন। ২০১৫ সালে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ রূপায়ণ করার নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকারকে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ওই বছরই বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা করে রাজ্য। অম্বিকেশবাবুর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও শামিম আহমেদ জানান, এ দিন সেই মামলার শুনানিতে নানান প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়।রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অভ্রতোষ মজুমদার আদালতে জানান, যে-দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে কমিশন বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছে, ঠিক ভাবে নোটিস পাঠিয়ে তাঁদের বক্তব্য শোনা হয়নি। অভ্রতোষবাবু আরও জানান, কমিশনের সুপারিশ মানতেই হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তা শুনে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, ‘‘তা হলে কমিশনের চেয়ারম্যানকে শুধু শুধু বেতন দেওয়া হয় কেন? কমিশন কোনও সুপারিশ করলে রাজ্য চুপ করে বসে থাকতে পারে না।’’