Primary Teachers

দেশের প্রয়োজনেই বিএলও হিসাবে কাজ করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষকদের, স্পষ্ট করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট

বিএলও হিসাবে কাজ করতে আপত্তি জানিয়ে সম্প্রতি হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের দাবি ছিল, কমিশন তাঁদের বিএলও হিসাবে নিয়োগ করছে। তাঁদের এই কাজ থেকে নিষ্কৃতি দেওয়া হোক। এমনিতেই সোম থেকে শনি স্কুলের কাজ সেরে ছুটি থাকে এক দিন। সেই একদিনে কি বিএলও-র কাজ করা সম্ভব?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৫ ১৫:৪৭
Share:

বিএলও হিসাবে কাজ করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষকদের, নির্দেশ দিয়ে জানাল হাই কোর্ট। — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও) হিসাবে কাজ করতে হবে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের। এ বার এমনটাই জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের নির্দেশ, দেশের স্বার্থে প্রাথমিক শিক্ষকদের এই কাজ করতেই হবে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করা হবে না।

Advertisement

সোমবার আদালতে বিচারপতি অমৃতা সিংহ বলেন, বিএলও-দের কী কাজ করতে হবে, তা এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে দেয়নি কমিশন। কত ক্ষণ কাজ করতে হবে, সে বিষয়েও কিছু বলা হয়নি। তা হলে মামলাকারী প্রাথমিক শিক্ষকেরা কেন ধরে নিচ্ছেন তাঁদের পূর্ণ সময় কাজ করানো হবে? কী কাজ করতে হবে, তা কমিশন যথাসময়ে নির্দিষ্ট করে দেবে। কিন্তু দেশের স্বার্থে প্রাথমিক শিক্ষকদের এই কাজ করতেই হবে। বিচারপতির সংযোজন, কর্মক্ষেত্রের কাজ শেষ করে অতিরিক্ত সময়ে করতে হবে ভোটের কাজ।

বিএলও হিসাবে কাজ করতে আপত্তি জানিয়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ সম্প্রতি হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, কমিশন তাঁদের বুথ স্তরের আধিকারিক বা বিএলও হিসাবে নিয়োগ করছে। তাঁদের এই কাজ থেকে নিষ্কৃতি দেওয়া হোক। কারণ, প্রাথমিক শিক্ষক হিসাবে এমনিতেই তাঁদের সপ্তাহে সোম থেকে শনিবার পর্যন্ত স্কুলে ছাত্রদের পড়াতে হয়। পাশাপাশি, থাকে নানা আনুষঙ্গিক কাজও। তার মধ্যে কি বিএলও হিসাবে অতিরিক্ত কাজ করা সম্ভব? কমিশন যুক্তি দেয়, প্রয়োজনে নিজের কাজ সেরে অতিরিক্ত সময়ে তাঁরা বিএলও হিসাবে কাজ করতে পারেন। কিন্তু বিএলও-র কাজও নেহাত কম নয়। সোম থেকে শনি স্কুলে পড়ানোর পর শুধুমাত্র রবিবার ছুটি পান প্রাথমিক শিক্ষকেরা। সেই একটি মাত্র ছুটির দিনে কি বিএলও-র সব কাজ করা সম্ভব? এমনই নানা কারণ দেখিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকেরা। সোমবার সেই আবেদন নাকচ করে দিয়েছে আদালত।

Advertisement

আদালতের যুক্তি, ভোটের কাজ করা প্রাথমিক শিক্ষক-সহ যে কোনও সরকারি দফতরের কর্মীদের চাকরির শর্তের মধ্যেই পড়ে। তা ছাড়া, বিএলও হিসাবে কী কী কাজ করতে হবে, তা এখনও পর্যন্ত বলা হয়নি। ফলে অতিরিক্ত সময়ে ভোটের কাজ করতে প্রাথমিক শিক্ষকদের আপত্তি থাকা উচিত নয়। উল্লেখ্য, অতীতে কেরল হাই কোর্টের একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টও একই রায় দিয়েছিল। শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, বিএলও-র কাজ করলে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটানো যাবে না। নিজেদের কাজ শেষ করে অতিরিক্ত সময়ে ভোটের কাজ করতে হবে। সেই রায় মেনেই এ বার রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের কাজ করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট।

প্রসঙ্গত, বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সমীক্ষা (স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা এসআইআর) হয়ে গিয়েছে। এ বার পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশে শুরু হচ্ছে এসআইআর-এর কাজ। পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে তার প্রস্তুতি। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে এ বিষয়ে চিঠিও পাঠানো হয়ে গিয়েছে দেশের সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতরে। চিঠিতে বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও), বিএলও সুপারভাইজ়ার, বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ) নিয়োগ এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। সেই সংক্রান্ত তথ্য অবিলম্বে জমা দিতেও বলা হয়েছে সিইও-দের। সেই আবহেই এল বিএলও নিয়োগ নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement