Calcutta High Court on Home Loan

গৃহঋণ ২০ লক্ষ টাকার কম হলে তা আদায়ের জন্য জমি বা বাড়ি বাজেয়াপ্ত করা যাবে না! জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট

২০ লক্ষ টাকার কম পরিমাণ গৃহঋণ নিলে সরফেসি আইন প্রয়োগ করা যায় না। জোর করে জমি বা বাড়ি বাজেয়াপ্ত করা বা নিলামে তা বিক্রি করে দেওয়াও যায় না। জানিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:৪১
Share:

গৃহঋণ জোর করে আদায় করা বেআইনি বলল কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

২০ লক্ষ টাকার কম গৃহঋণ নিলে তা আদায়ের জন্য জমি বা বাড়ি বাজেয়াপ্ত করতে পারবে না ঋণদানকারী আর্থিক সংস্থা। একটি মামলায় এমনটাই নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বলা হয়েছে, এই পরিমাণ ঋণের খেলাপিতে সরফেসি আইন প্রয়োগ করা যায় না। সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে দেওয়া বা জোর করে টাকা আদায় করাও বেআইনি। আদালতে মামলা করেই ঋণের টাকা আদায় করতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে।

Advertisement

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গোলাম সাবির নামের এক ব্যক্তি গৃহঋণ হিসাবে ১৩ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। ঋণদানকারী সংস্থা একটি হাউসিং ফিনান্স কোম্পানি (এইচএফসি)। ঋণ নেওয়ার পরে প্রথম কয়েক মাস কিস্তির টাকা সময়মতো দিয়ে দেন সাবির। কিন্তু অভিযোগ, কয়েক মাস পর থেকে আর কিস্তির টাকা তিনি শোধ করেননি। টাকা না পেয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থা সরফেসি আইন প্রয়োগ করে। ২০০২ সালের এই আইনে বলা হয়েছে, কেউ ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে তাঁর বাড়ি, জমি বা ফ্ল্যাট বাজেয়াপ্ত করে বিক্রি করতে পারে ঋণদাতা ব্যাঙ্ক বা আর্থিক সংস্থা। তার জন্য আদালতের অনুমতির প্রয়োজনও হয় না।

এইচএফসি সরফেসি আইনে পদক্ষেপ করলে তার বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সাবির। তাঁর আইনজীবী প্রসিত দেব এবং সুচেতা মিত্রের সওয়াল, ১৩–১৪ লক্ষ টাকার ঋণের জন্য কি সরফেসির মতো কঠোর আইন ব্যবহার করা যায়? ২০২০ এবং ২০২১ সালে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) জানিয়েছিল, ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি (এনবিএফসি) ২০ লক্ষ টাকার কম ঋণে এমন কঠোর পদক্ষেপ করতে পারে না। সংস্থার পক্ষে সওয়ালকারী আইনজীবী সোনি ওঝার পাল্টা দাবি, ব্যাঙ্ক নয় এমন এনবিএফসি সংস্থার ক্ষেত্রে ওই নিয়ম প্রযোজ্য বলে জানিয়েছিল আরবিআই। কিন্তু এইচএফসি তেমন সংস্থা নয়। তাই তার ক্ষেত্রে ওই নিয়ম প্রযোজ্য হওয়া উচিত নয়। বন্ধক রাখা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পরে আপত্তি থাকলে নির্দিষ্ট ট্রাইবুনালে আবেদন করা যায়। কিন্তু হাই কোর্ট এই অবস্থায় মামলা শুনতে পারে না।

Advertisement

সংস্থার যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ২০১৯ সালে আরবিআই স্পষ্ট জানিয়েছে, সকল এইচএফসি আসলে এনবিএফসি-এর শ্রেণিভুক্ত। ফলে এনবিএফসি-এর ক্ষেত্রে যে নিয়ম রয়েছে, এ ক্ষেত্রেও তা-ই প্রযোজ্য হবে। আইনের চোখে দুই-ই সমান। আদালতের নির্দেশ, সরফেসি আইন মেনে পদক্ষেপ করতে পারবে না ওই আর্থিক সংস্থা। আদালতে মামলা করেই ঋণের টাকা আদায় করতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement