দুর্ঘটনাগ্রস্ত ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস। — নিজস্ব চিত্র
সেতু থেকে গড়িয়ে নদীতে পড়ে গেল ক্যাপিটাল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন। চলন্ত অবস্থায় ইঞ্জিন লাইনচ্যূত হয়ে জলে পড়ে যাওয়া, পেছনের দু’টি কামরা তুবড়ে পাহাড়ের মতো ওপরের দিকে উঠে গিয়েছে। কামরার ভিতর আটকে থাকা দু’জনের মৃত্যুহয়েছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ শামুকতলা রোড স্টেষশন লাগোয়া হাড়িভাঙা সেতুর কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। রাত এগারোটা নাগাদ উদ্দার কাজ শুরু হয়। তবে তার আগেই কামরার যাত্রীদের অনেকে নিজেরাই বেরিয়ে এসেছেন। আহত অন্তত ৬ জন। তাঁদের তিন জনকে প্রাথমিক চিকিত্সার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকিদের এক জন আলিপুরদুয়ার রেল হাসপাতালে অন্য দু’জন আনিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
শামুকলতা রোড স্টেশন পার করার পরে হাড়িভাঙা সেতুতে ওঠার পরেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় ক্যাপিট্যাল এক্সপ্রেস। সেতু পার করার পরেই ইঞ্জিনের পর থেকে লাগেজ রেক সহ তিনটি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে। দু’টি কামরা তুবড়ে উপরের দিকে উঠে গিয়েছে। ট্রেনের ইঞ্জিনও দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। শামুকতলা রোড স্টেশনে ট্রেনটির স্টপেজ ছিল না। সাধারণত স্টেশন এবং লাগোয়া এলাকায় রেল সেতু থাকলে ট্রেনের গতি কমানো হয়। এ ক্ষেত্রে ট্রেনের গতি কম ছিল না বলে যাত্রীদের অভিযোগ। যাত্রীদের কয়েকজন জানিয়েছেন, সেতুতে ওঠার পরেই বিকট শব্দ হয়। সব কামরাই দুলে ওঠে। ক্ষতিগ্রস্ত কামরা ছাড়াও সংরক্ষিত অনান্য কামরার যাত্রীদেরও অনেকেই তীব্র ঝাকুনিতে পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, রাত পর্যন্ত যাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে তাঁদের আঘাত আশঙ্কাজনক নয়। তবে কামরার ভিতরে বেশ কয়েকজন আটকে রয়েছে।
রেলের তরফে উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে। অসমগামী লাইনে আপাতত ট্রেন চলাচল বন্ধ। এ দিকে ইঞ্জিন চালকের খোঁজ মেলেনি। নদীতে এই সময়ে বেশি জল নেই। পুলিশ এবং রেলের বিপর্যয় মোকাবিলা দল জলেও তল্লাশই শুরু করেছে। ঘটনার খবর পেয়েই রাতেই আলিপুরদুয়ার ডিভিশন থেকে রিলিফ ট্রেন নিয়ে রওনা দেন রেলের আধিকারিকরা। প্রস্তুত রাখা হয় নিউ জলপাইগুড়ির বিপর্যয় মোকাবিলা দলকেও। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিআরএম সঞ্জীব কিশোর বলেন, ‘‘উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে। হতাহতের বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না।’’
শাসকদল তৃণমূলের তরফেও উদ্ধার এবং যাত্রীদের নিরাপদ জায়গায় পাঠানোর জন্য আলিপুরদুয়ার এবং শামুকতলা থেকে দল পাঠানো হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রেলের সঙ্গে জেলা প্রশাসন-পুলিশ সমন্বয় করে উদ্ধার কাজ করছে। আতঙ্কগ্রস্ত যাত্রীদের নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন যাবতীয় সহযোগিতা করছে।’’