Car

নজরে দুর্নীতি, গাড়ি বাজেয়াপ্ত অর্জুন-ভাইপোর

পুলিশ বাজেয়াপ্ত করার পরেও কেন গোয়েন্দা বিভাগ সেটিকে নিজেদের হেফাজতে নিল?

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০৩:১১
Share:

এই গাড়িটিই বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

গাড়িতে লেখা ‘পুলিশ’। উপরে নীল বাতি। দুধসাদা এসইউভি-টিকে দেখা যেত ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহের কনভয়ে। তাঁর নিরাপত্তা রক্ষীরা ওই গাড়িটি ব্যবহার করতেন। শনিবার রাতে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ গাড়িটি বীজপুর থানা থেকে বাজেয়াপ্ত করেছে।

Advertisement

৫ জুলাই হালিশহরে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে ওই গাড়িটি ভাঙচুর হয়েছিল। তার পর সেটি বীজপুর থানা বাজেয়াপ্ত করেছিল। তাদের হাত থেকে বাজেয়াপ্ত করল গোয়েন্দা বিভাগ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়িটি ‘রকওয়েল রিসোর্সেস আর্থমুভার্স প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি’-র নামে রয়েছে। তার ঠিকানা ভাটপাড়ার মজদুর ভবন। সেটি বর্তমানে অর্জুনের বাসভবন। রকওয়েল সংস্থার অন্যতম অংশীদার অর্জুনের ভাইপো সঞ্জিত (পাপ্পু) সিংহ।

পুলিশ বাজেয়াপ্ত করার পরেও কেন গোয়েন্দা বিভাগ সেটিকে নিজেদের হেফাজতে নিল? ব্যারাকপুরের গোয়েন্দা প্রধান অজয় ঠাকুর বলেন, “ভাটপাড়া-নৈহাটি সমবায় ব্যাঙ্কের আর্থিক দুর্নীতির একটা তদন্ত আমরা চালাচ্ছি। সেখানে অনৈতিক লেনদেনে রকওয়েল সংস্থার নাম এসেছে। ওই ব্যাঙ্কের ঋণের টাকা অনৈতিকভাবে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে। পাপ্পু সিংহকে আমরা একাধিকবার নোটিস পাঠিয়ে ডেকেছিলাম। কিন্তু তিনি আসেননি। তদন্তের স্বার্থে তাঁর সংস্থার গাড়িটি আমরা বাজেয়াপ্ত করেছি। এর পর পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” অর্জুনের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। তা হলে তাঁর গাড়িতে কেন পুলিশ লেখা রয়েছে, গোয়েন্দা বিভাগ তারও তদন্ত করছে।

Advertisement

এই বিষয়ে পাপ্পুর কাছে জানতে চাওয়া হলে, তিনি বলেন, “আমি ওই গাড়ির বিষয়ে কিছু জানি না। এটা আমার উকিল বলতে পারবেন। রকওয়েল নিয়ে কোনও অভিযোগের কথা আমি জানি না। এর থেকে বেশি কিছু জানতে হলে আমি পরে বলতে পারব।” অর্জুন অবশ্য গাড়ি বাজেয়াপ্ত করার খবর স্বীকার করে নেন। তবে গোয়েন্দা বিভাগ সেই গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে বলে জানেন না বলে তাঁর দাবি। তিনি বলেন, “৫ তারিখই ওই গাড়িটি বীজপুর থানা বাজেয়াপ্ত করেছিল। ২৪৫ নম্বর কেসের সিজ়ার লিস্টে ওই গাড়িটি রয়েছে। গোয়েন্দা বিভাগ কী করেছে, না করেছে আমি জানি না।” তাঁর ভাইপোর সংস্থার বিষয়ে অর্জুন বলেন, “রকওয়েল সংস্থা নিয়ে পুলিশ কিছু করতে পারলে করুক। কোনও সংস্থার নামে গাড়ি থাকা কি বেআইনি নাকি? সর্বত্র পুলিশি রাজ চলছে। সমবায় ব্যাঙ্কের তদন্তে পুলিশ কিছুই করতে পারবে না। আমার পরিবারকে অযথা হেনস্থা করতেই এই সব করা হচ্ছে।”

গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে অন্যের নেওয়া ঋণের পুরো টাকা রকওয়েল সংস্থার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করা হয়নি। এ দিকে ওই টাকা ঋণগ্রহীতা কেন পাপ্পুর সংস্থাকে দিয়েছেন, তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। অজয় ঠাকুর জানান, তাঁরা তদন্তে অনেক দূর এগিয়েছেন। শিগগিরই পদক্ষেপ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন