Cardiac Arrest

Cardiac Patient: চার সরকারি হাসপাতাল ঘুরে মৃত্যু সেই রোগীর

নবদ্বীপের বামুনডাঙার বাসিন্দা ভক্ত বিশ্বাস (৫৫) বুধবার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। রাতেই তাঁকে কৃষ্ণনগরে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর ও কল্যাণী  শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:৩৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

একের পর এক হাসপাতাল ঘুরে কৃষ্ণনগরে ফিরে এসে মৃত্যু হল হৃদ্রোগীর। যারা তাঁকে ভর্তি না নিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিল, তাদের মধ্যে তিনটি কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ এবং একটি কল্যাণীর সরকারি হাসপাতাল।

Advertisement

নবদ্বীপের বামুনডাঙার বাসিন্দা ভক্ত বিশ্বাস (৫৫) বুধবার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। রাতেই তাঁকে কৃষ্ণনগরে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ না থাকায় তাঁকে কল্যাণীতে গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরিবারের অভিযোগ, সেখানে ভর্তি না নিয়ে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যেতে বলা হয়। রাতেই আরজিকর, এসএসকেএম এবং এনআরএসে নিয়ে গিয়েও তাঁকে ভর্তি করা যায়নি। মাঝে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও খরচের বহর শুনে বাড়ির লোক পিছিয়ে যান। বৃহস্পতিবার রাতে কৃষ্ণনগরেরই একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তত ক্ষণে তাঁর অবস্থা এতটাই খারাপ যে ওই হাসপাতালটিও হাত তুলে নেয়। প্রায় ২৪ ঘণ্টা চরকির মতো ঘোরার পর রোগীকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়।

নদিয়ার ওই জেলা হাসপাতাল সূত্রের খবর, ফিরিয়ে আনা রোগীকে ফের ভর্তি করার সময়েই চিকিৎসক বিনোদকুমার দাস জানিয়েছিলেন, রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ। হৃদ্যন্ত্রের পাশাপাশি মস্তিষ্কের বাঁ দিক পুরোপুরি অকেজো হয়ে গিয়েছে। বাঁচার আশা খুব কম। শুক্রবার রাতেই মারা যান ভক্ত বিশ্বাস। বিনোদবাবু বলেন, “একেবারে শেষ মুহূর্তে ওই রোগীকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। সব রকম চেষ্টা করেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।” তবে কি ঠিক সময়ে চিকিৎসা না পাওয়ার কারণেই মৃত্যু হল ভক্ত বিশ্বাসের? বিনোদবাবু বলেন, “এ সব রোগীর ক্ষেত্রে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না। তবে আগে চিকিৎসা হলে বাঁচানোর জন্য বেশি চেষ্টা করা যেত। এখানে পরিকাঠামো না থাকার কারণেই রোগীকে গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।” ‘কার্ডিও-থোরাসিক ইউনিট’ থাকা সত্ত্বেও কল্যাণীর গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভক্তবাবুর চিকিৎসা করা গেল না কেন?

Advertisement

বুধবার রাতে সেখানে কর্মরত চিকিৎসক অভয়নাথ চতুর্বেদী বলেন, “যদি কারও হার্ট ব্লকের পাশাপাশি অন্য রোগ থাকে, সে ক্ষেত্রে যেখানে একসঙ্গে নানা চিকিৎসক পাওয়া যায়, আমরা রোগীকে সেখানে যেতে বলি।” ওই হাসপাতালের সুপার গোপাল দাস বলেন, “ইমারজেন্সি পেসমেকার বসানোর ব্যবস্থা নেই এখানে। রোগীর ইসিজি করে দেখা গিয়েছিল, সম্পূর্ণ হার্ট ব্লক। ইমারজেন্সি অ্যাঞ্জিওগ্রাফিও আমাদের হয় না। তৎক্ষণাৎ পরিষেবা দেওয়ার পরিকাঠামো আমাদের নেই বুঝে রোগীর পরিবারের লোকই ওঁকে কলকাতায় নিয়ে যান।” তিনি জানান, ভক্তবাবু সেখানে ভর্তি হননি, তাই তাঁকে ‘রেফার’ও করা হয়নি।

কলকাতার তিনটি বড় সরকারি হাসপাতাল ভক্তবাবুকে ভর্তি নিল না কেন, সেই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর অবশ্য মেলেনি। রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, “বিষয়টি যদি আগে জানতে পারতাম, তা হলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেত। এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন