রাজীবদের ফের তলব করল সিবিআই

সারদা তদন্ত নিয়ে ‘আলোচনা’ চায় সিআইডি। সিবিআই অনড় ‘জিজ্ঞাসাবাদে’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৮ ০৪:১৮
Share:

রাজীব কুমার।

সারদা তদন্ত নিয়ে ‘আলোচনা’ চায় সিআইডি। সিবিআই অনড় ‘জিজ্ঞাসাবাদে’।

Advertisement

গত সপ্তাহে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে প্রথমে ই-মেল করে ও পরে চিঠি পাঠিয়ে তিন বর্তমান ও এক প্রাক্তন আইপিএস-কে তলব করেছিল সিবিআই। এঁরা হলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (১) বিনীত গোয়েল, আইজি (রেল) তমাল বসু এবং অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্তা পল্লবকান্তি ঘোষ। এই চার জনই সারদা তদন্তে রাজ্য সরকারের তৈরি করা বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর সদস্য ছিলেন। একই সঙ্গে ডাকা হয়েছিল অর্ণব ঘোষ-সহ সিটের সদস্য আরও কিছু পুলিশ অফিসারকে। ২১ থেকে ২৪ অগস্টের মধ্যে তাঁদের সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে হাজির হতে বলা হয়েছিল। কিন্তু নবান্নের নির্দেশে হাজিরা দেননি পুলিশকর্তারা।

এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সিআইডির ডিআইজি-কে ফের চিঠি দিয়ে সিবিআই বলেছে, পুলিশ অফিসারদের দ্রুত হাজিরা দিতে হবে। তবে এ বার কোনও দিনক্ষণ বা স্থান নির্দিষ্ট করে দেয়নি সিবিআই। তারা বলেছে, কবে রাজ্যের অফিসারেরা আসতে চান, তা জানানো হোক। প্রয়োজনে সল্টলেকের সিবিআই অফিসে তাঁদের আসতে হবে না। কোন জায়গায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে সেই প্রস্তাবও সিআইডি দিতে পারে।

Advertisement

আরও পড়ুন: অশান্তির আশঙ্কায় বোর্ড গঠনে ভোট চায় না শাসক

সিআইডির এডিজি সঞ্জয় সিংহ বলেছেন, ‘‘এমন চিঠির কথা আমার অন্তত জানা নেই।’’ যদিও সিবিআই সূত্র বলছে, সিআইডির এক ডিআইজি ই-মেল পাঠিয়ে তাঁদের বলেছেন, ‘চিটফান্ড তদন্ত নিয়ে তৎকালীন সিট-এর সদস্যেরা আলোচনা করতেই পারেন। সেই আলোচনা হোক।’ সিবিআইয়ের ওই কর্তার মন্তব্য, ‘‘গত ছ’বছর ধরে তদন্তে সহযোগিতা চেয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। তাই এখন ওঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা ছাড়া উপায় নেই।’’

সিবিআই সূত্রের দাবি, সুপ্রিম কোর্ট সারদা তদন্তে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের খোঁজ করতে বলেছে। কাশ্মীরের সোনমার্গে সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পরে রাজ্য পুলিশ যে সব নথি বাজেয়াপ্ত করেছিল, তার অনেক কিছুই সিবিআই হাতে পায়নি। যেমন একটি ডায়েরি। যাতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল বলে দেবযানী সিবিআই গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি, ২০১৩ সালে সারদার মিডল্যান্ড পার্কের অফিস থেকে ২২টি ট্রাঙ্ক বোঝাই দস্তাবেজ উদ্ধার হয়েছিল। দেবযানী তার সূচি তৈরি করেছিলেন। তারও অনেক কিছু হাতে পায়নি সিবিআই।

এ ছাড়া, সারদা কেলেঙ্কারিতে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে প্রাক্তন বিচারপতি শ্যামল সেনের নেতৃত্বে কমিশন গড়েছিল রাজ্য। কমিশনের কাছে যে সব অভিযোগ জমা পড়েছিল, তা সিটের কাছে পাঠিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু বহু অভিযোগের আর কোনও হদিস নেই। এই সব তথ্যপ্রমাণ লোপাট ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’-এর অঙ্গ বলেই সিবিআই মনে করছে।

সিবিআই কর্তাদের বক্তব্য, রাজীব কুমার সিটের প্রধান ছিলেন। বিনীত গোয়েল, তমাল বসু, পল্লবকান্তি ঘোষ ছিলেন সিটের অন্যতম সদস্য। সিটের তদন্ত চলাকালীন প্রতি মাসে কলকাতা হাইকোর্টে তদন্তের অগ্রগতি জানাতেন অর্ণব ঘোষ। তাই এঁদের সকলের কাছ থেকেই অনেক কিছু জানার আছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন