ভোট-পরবর্তী সময়ে ধর্ষণে অভিযুক্তকে চার বছর পরে গ্রেফতার করল সিবিআই। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের ভোট-পরবর্তী হিংসায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে উত্তরপ্রদেশের গাজ়িয়াবাদ থেকে গ্রেফতার করল সিবিআই। বুধবার তাঁকে সুপ্রিম কোর্টে হাজির করানো হবে। ধৃতের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, ২০২১ সালের ৪ মে বাড়িতে ঢুকে এক মহিলাকে তিনি ধর্ষণ করেন। চার বছর ধরে অভিযুক্ত পলাতক ছিলেন। এমনকি, কলকাতা হাই কোর্ট থেকে তাঁর জামিনও মঞ্জুর করা হয়েছিল। পরে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সিবিআইয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গাজ়িয়াবাদের একটি মসজিদের কাছে অভিযুক্ত লুকিয়ে ছিলেন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের পরে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওই বছরের ৩০ অগস্ট এ বিষয়ে একটি মামলা রুজু করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। অভিযোগ ছিল, ৪ মে ঘরে ঢুকে মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এক বছরের মাথায় ২০২২ সালের ৫ মে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিট দাখিল করে। কিন্তু অভিযুক্তকে ধরা যায়নি। তিনি পলাতক ছিলেন। তমলুকের বিশেষ আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিল সিবিআই।
২০২৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর এই মামলায় অভিযুক্তকে জামিন দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। সিবিআই সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। শীর্ষ আদালত থেকে অভিযুক্তকে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নোটিস পাওয়া সত্ত্বেও আদালতে হাজিরা দেননি অভিযুক্ত বা তাঁর আইনজীবী। এর পর গত ২ অগস্ট অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। আদালত নির্দেশ দেয়, ১৩ অগস্টের মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে হবে এবং আদালতে হাজির করতে হবে।
অভিযুক্তের খোঁজে এর পরেই জোরদার তল্লাশি শুরু করেন কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকেরা। গাজ়িয়াবাদের ইলাইচিপুরের একটি মসজিদের কাছে তিনি লুকিয়ে ছিলেন বলে অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে বুধবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হবে।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্য জুড়ে ব্যাপক হিংসার অভিযোগ উঠেছিল। বিরোধীদের তরফে খুন, ধর্ষণ, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো নানা অভিযোগ তোলা হয়েছিল। বহু মানুষ ঘরছাড়া ছিলেন বলে দাবি। হাই কোর্টের নির্দেশে সেই সমস্ত ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। চার বছর পর ভোট-পরবর্তী হিংসায় অভিযুক্ত আরও এক জনকে গ্রেফতার করা হল।