কী আর বলব স্যার! স্তিমিত রজত জেলেই

শেষ পর্যন্ত জেলেই গেলেন প্রাক্তন ডিজি। সারদা কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে তৃণমূল নেতা তথা রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি রজত মজুমদারকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। নিজেদের হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের পর শুক্রবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। রজতবাবুর আইনজীবী জামিনের আর্জি জানালেও সিবিআইয়ের আবেদন মেনে তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট হারাধন মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১১
Share:

আলিপুর আদালত চত্বরে রজত মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।

শেষ পর্যন্ত জেলেই গেলেন প্রাক্তন ডিজি।

Advertisement

সারদা কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে তৃণমূল নেতা তথা রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি রজত মজুমদারকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। নিজেদের হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের পর শুক্রবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। রজতবাবুর আইনজীবী জামিনের আর্জি জানালেও সিবিআইয়ের আবেদন মেনে তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট হারাধন মুখোপাধ্যায়।

এ দিন আদালতে সিবিআই জানায়, সারদা অর্থলগ্নি সংস্থার ব্যবসা ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তোলার পিছনে প্রভাব খাটিয়েছিলেন প্রাক্তন আইপিএস রজতবাবু। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি সারদার পরামর্শদাতা হিসেবে যোগ দেন। তদন্তকারীদের দাবি, প্রাক্তন ডিজি-কে জেরা করে সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে অনেক তথ্য মিলেছে। সারদার ব্যবসা বাড়ানোর পিছনে তাঁর প্রভাব খাটানোর প্রমাণও মিলেছে বলে সিবিআইয়ের দাবি।

Advertisement

৯ সেপ্টেম্বর রজতবাবুকে ডেকে পাঠিয়ে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। পরে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। ১১ সেপ্টেম্বর তাঁকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। সে দিন ভরা এজলাসেই রজতবাবু সুকৌশলে সারদা মামলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের নাম তুলেছিলেন। সিবিআই অফিসারদের রীতিমতো হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি।

এ দিন অবশ্য তাঁর শরীরী ভাষা ছিল পুরোপুরি আলাদা। গোটা সময়টাই মুখে প্রায় কুলুপ এঁটে বসেছিলেন। মেজাজও ছিল মিইয়ে যাওয়া। বিচারক তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, সিবিআই হেফাজতে তাঁকে মানসিক চাপ দেওয়া হচ্ছে কি না। চাপা স্বরে রজতবাবু বলেন, “কী আর বলব স্যার!” তার পর কিছুটা থেমে ফের বলেন, “সেটা তো কিছুটা হচ্ছেই।”

এ দিন রজতবাবুর আইনজীবী সঞ্জয় বসু আদালতে বলেন, সিবিআই রজতবাবুর বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারির তথ্য আদালতে দাখিল করতে পারেনি। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রজতবাবুকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

সারদা কেলেঙ্কারিতে ধৃত ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার ওরফে নিতু এবং ব্যবসায়ী সন্ধির অগ্রবালকেও এ দিন আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। দেবব্রতবাবু আদালতে জানান, তিনি অসুস্থ। বাঁ হাঁটু ফুলে গিয়েছে। হৃদ্যন্ত্রেও গোলমাল রয়েছে। জেল হাসপাতালের সুপারিশে সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা করানো হয়েছে। কিন্তু এক জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখানোর সুপারিশ থাকলেও তা কার্যকর হয়নি বলে দাবি করেন দেবব্রত। তবে দেবব্রতর আইনজীবীরা তাঁকে ‘ডিভিশন ওয়ান’ (রাজবন্দি) সুবিধা দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদন মঞ্জুর করেছিল আদালত। দেবব্রত জানান, সংশোধনাগারে তিনি এই সুবিধা পাচ্ছেন। দেবব্রত ও ও সন্ধিরকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন