মুকুল রায়।
নারদ-কাণ্ডের তদন্তে গত এক মাসে মুকুল রায়কে দু’বার ডেকে পাঠিয়ে জেরা করেছে সিবিআই। এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, গত জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে এবং চলতি অগস্ট মাসের গোড়ায় নারদ-কাণ্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুকুলবাবুকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তৃণমূলে থাকাকালেও মুকুলবাবুকে নারদ-কাণ্ডে জেরা করেছিল সিবিআই। তিনি বিজেপিতে যাওয়ার পর ওই বিষয়ে তাঁকে প্রথম জেরা করা হয় গত জুলাই মাসে।
নারদের স্টিং অপারেশনের ফুটেজে ঘুষ-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত আইপিএস অফিসার এস এম এইচ মির্জাকে বার বার মুকুলবাবুর নাম বলতে শোনা গিয়েছিল। ওই ফুটেজে দেখা গিয়েছিল, মির্জা বলছেন, তিনি যা করেছেন, তা সবই করেছেন ‘মুকুলদা’র নির্দেশে। টাকা নিয়ে তিনি ‘মুকুলদা’কে পৌঁছে দেবেন। সিবিআই সূত্রের খবর, নারদ-কাণ্ডে দু’বারের জেরাতেই মুকুলবাবুকে মির্জার ওই কথাগুলি নিয়ে প্রশ্ন করেছেন তদন্তকারীরা। মির্জার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা আগেই অস্বীকার করেছেন মুকুলবাবু। এই পর্বে মুকুলবাবুকে প্রশ্ন করা হয়, নারদের ভিডিও ফুটেজে মির্জা বার বার তাঁর নাম বলা সত্ত্বেও তিনি মির্জার বিরুদ্ধে কোনও আইনি ব্যবস্থা নেননি কেন? সিবিআই সূত্রের খবর, তৃণমূলে থাকাকালে মুকুলবাবুকে এক বার মির্জার সামনে বসিয়ে জেরা করা হয়েছিল।
অতি সম্প্রতি সারদা এবং রোজভ্যালি কাণ্ড নিয়ে ফের নাড়াচাড়া শুরু করেছে সিবিআই। সারদা-কাণ্ডের তদন্তে রাজ্যের চার আইপিএস অফিসারকে ডেকে পাঠিয়েছে তারা। তৃণমূল অবশ্য বলেছে, এটা কোনও জেরা বা ডেকে পাঠানো নয়। এর উদ্দেশ্য—রাজ্যের অফিসারদের সঙ্গে পারস্পরিক আলোচনা। তবে লোকসভা ভোটের আগে তাদের বিপাকে ফেলতে বিজেপি যে এই ভাবে সিবিআইকে ব্যবহার করছে, সেই অভিযোগ তৃণমূলের আছে।
আরও পড়ুন: সিবিআইয়ের নজরে চার ইনস্পেক্টরও
কিন্তু এখন মুকুলবাবুর জেরার পরে বিজেপির একাংশ মনে করছে, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ আর ধোপে টিকবে না। বিষয়টিকে এই ভাবেই তুলে ধরতে চায় বিজেপি। যদিও তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করেন, মুকুলবাবুকে সিবিআইয়ের জেরা আসলে লোক-দেখানো। মানুষের চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা। আসল ‘খেলা’ ভিতরে-ভিতরে চলছে। তবে বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, সিবিআইয়ের দু’বারের জেরার পরে দৃশ্যতই অস্বস্তিতে রয়েছেন মুকুলবাবু। ভোটের আগে এই ঘটনায় দলে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীও বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করতে তৎপর।
মুকুলবাবুর বক্তব্য জানতে বৃহস্পতিবার তাঁকে ফোন করা হলে তা বেজে গিয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপেও জবাব মেলেনি।