দেখা করলেন পার্থরা

সারদাতেও সুদীপের যোগ ছিল, বলছে সিবিআই

গোয়েন্দাদের জালে ক্রমশ জড়িয়ে যাচ্ছেন রোজভ্যালি-কাণ্ডে ধৃত তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার সারদা-কাণ্ডেও সুদীপকে অভিযুক্ত করতে চাইছে সিবিআই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:২২
Share:

গোয়েন্দাদের জালে ক্রমশ জড়িয়ে যাচ্ছেন রোজভ্যালি-কাণ্ডে ধৃত তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার সারদা-কাণ্ডেও সুদীপকে অভিযুক্ত করতে চাইছে সিবিআই।

Advertisement

রবিবার তদন্তকারীরা দাবি করেন, সেবি কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে ইঙ্গিত পেয়ে সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন দ্বারস্থ হন সুদীপবাবুর। দু’জনে একাধিক বার বৈঠকও হয়েছে।

তদন্তকারীদের দাবি, রবিবার জেরার সময়ে সল্টলেকের মিডল্যান্ড পার্কে সারদার অফিসে তোলা একটি ছবি দেখানো হয় সুদীপকে। সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে সুদীপের বৈঠকের ছবি ওটি। পাশাপাশি সারদা তদন্তে সংগৃহীত কয়েকটি লিখিত বয়ানও দেখানো হয় সুদীপকে। মাসখানেক আগে সুদীপ্ত সেন ও সারদার অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে জেরা করেছিল সিবিআই। তখনই ওই লিখিত বয়ান সংগ্রহ করা হয়েছিল বলে সিবিআইয়ের দাবি।

Advertisement

তদন্তকারীদের দাবি, ২০০৯ সালে সাংসদ হওয়ার পরে সুদীপ কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির সদস্য হন। ২০১০ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি অভিযোগের ভিত্তিতে সারদার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করে সেবি। তারা সারদাকে এ নিয়ে চিঠিও দেয়। সারদা-কর্তার সঙ্গে সুদীপ সেই সময়েই বৈঠক করেছিলেন বলে একাধিক তথ্যপ্রমাণ তাঁদের হাতে এসেছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। এক অফিসারের কথায়, ‘‘আমরা সব তথ্য সাংসদকে দেখিয়েছি।’’ গত বুধবারই ভুবনেশ্বর আদালতে দাঁড়িয়ে সুদীপ দাবি করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে সারদার কোনও যোগ নেই।

ভুবনেশ্বরে সুদীপের সঙ্গে দেখার পরে তৃণমূলের নেতারা। —নিজস্ব চিত্র

তবে তৃণমূল যে এখনও সুদীপের পাশেই, তা বোঝাতে এ দিন ভুবনেশ্বরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক সুব্রত বক্সি এবং দুই প্রাক্তন মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সিবিআই হেফাজতে সুদীপের সঙ্গে মিনিট পনেরো কথাও বলেন তাঁরা।

এ দিন দুপুরে ভুবনেশ্বরে পৌঁছন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। বিকেলে সিবিআই অফিসে যান তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন সুদীপের স্ত্রী নয়না। দেখা করে পার্থবাবু সুদীপকে বলেন, ‘‘দল পাশে রয়েছে। আমরা লড়াই করছি। লড়াই জারি থাকবে।’’ জবাবে সুদীপ বলেন, ‘‘আমি ভিতর থেকে লড়াই করছি। তোমরা বাইরে লড়াই জারি রাখো।’’ কথা শেষে সুদীপকে জড়িয়ে ধরেন পার্থ ও সুব্রত।

সূত্রের খবর, এ সময় তিন জনেরই চোখ জলে ভিজে যায়। নয়না পরে বলেন, ‘‘আজ, সোমবার সুদীপকে ফের আদালতে পেশ করা হবে।’’

সিবিআই অফিস থেকে বেরিয়ে পার্থবাবুরা মঙ্গলবারের জনসভার প্রস্তুতি দেখতে যান। ভুবনেশ্বর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ওই সভা হবে বলে জানান পার্থবাবু। কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিধায়ক মানস ভুঁইয়া-সহ আরও কয়েক জন বিধায়ক-নেতাকে ওই সভায় যোগ দিতে বলেছেন তৃণমূল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ভুবনেশ্বরে ঝাড়পদা জেলে বন্দি তৃণমূলের অপর সাংসদ তাপস পালের সম্পর্কেও এ দিন খোঁজখবর নেন পার্থবাবুরা। এই মুহূর্তে জেল হাসপাতালেই রয়েছেন রোজভ্যালি কাণ্ডে ধৃত তাপস পাল। জেল সূত্রের খবর, তিনি কোনও খাবারই ছুঁয়ে দেখছেন না। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।

ঝাড়পদা জেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘উনি সুস্থই রয়েছেন। বিশেষ নজরদারিও রয়েছে। ওঁর বিশেষ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন