ছবি: সংগৃহীত
বাড়িতে গিয়ে নোটিস সেঁটে আসার পরেও মদন তামাঙ্গ হত্যা মামলায় কলকাতার নগর দায়রা আদালনে হাজির করানো গেল না বিমল গুরুঙ্গ, রোশন গিরি সহ মোর্চার প্রথম সারির ২২ নেতাকে। তা দেখে সোমবার সিবিআই আবেদন করল, গুরুঙ্গদের গ্রেফতারের জন্য যেন পরোয়ানা জারি করা হয়। সেই আবেদন নিয়ে আদালত আজ, মঙ্গলবার রায় দেবে।
মোর্চা নেতারা অবশ্য আদালতের কাছে তামাঙ্গ হত্যা মামলা অন্য রাজ্যে স্থানান্তরিত করার আবেদন জানিয়েছেন। রোশন গিরি ও পেম্বা ওলা শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে এই আবেদন করেন।
নেতাদের দাবি, পাহাড় নিয়ে এ রাজ্যে অশান্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। একাধিক মামলায় তাঁদের ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। তাই তাঁদের আশঙ্কা, নগর দায়রা আদালতে বিচার চলাকালীন তাঁদের প্রতি পদে হেনস্থা করা হতে পারে। তাঁরা কলকাতায় সুরক্ষিত নন বলেও দাবি করেছেন। মোর্চা নেতাদের আইনজীবীরা জানান, এই আবেদন নিয়ে চলতি সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হতে পারে।
রাজ্য সরকার অবশ্য মোর্চা নেতাদের এ ধরনের আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের এক নেতার বরং বক্তব্য, সিবিআই সারদা ও নারদ টেপ সংক্রান্ত তদন্তে যত তৎপর, তামাঙ্গ হত্যা মামলা নিয়ে ততটা সক্রিয় নয়। সে কারণেই তামাঙ্গ খুন হওয়ার ৭ বছর পরেও তদন্তে তেমন অগ্রগতি হয়নি। তৃণমূলের এই চাপের মুখে পড়েই সিবিআই আদালতের কাছে এ দিন গুরুঙ্গদের গ্রেফতারের জন্য আবেদন করেছে বলে মোর্চার অন্দরে ধারণা।
তাই গ্রেফতারি পরোয়ানা বেরিয়ে গেলে, সিবিআই গুরুঙ্গদের দ্রুত গ্রেফতারও করে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে পাহাড়ে। মোর্চা নেতারা এখনই যে কারণে আড়ালে চলে গিয়েছেন। দু’দিন ধরে গুরুঙ্গদের দার্জিলিঙে দেখাই যাচ্ছে না। মোর্চার অন্য নেতাদের বক্তব্য, দলের কাজেই কোথাও গিয়েছেন গুরুঙ্গ, রোশনরা। কিন্তু কোথায় গিয়েছেন, তা নিয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি।
তবে গুরুঙ্গরা এই ভাবে আড়ালে চলে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে পাহাড়ের আন্দোলনেও। ম্যালে রোজই নিয়মরক্ষার মতো করে ৩ জন অনশন করছেন। মিছিলও হচ্ছে। গোলমাল হয়নি রবিবার থেকে। যার ফলে সামান্য হলেও স্বস্তি প্রশাসনে। মোর্চার অবশ্য দাবি, তারা আগাগোড়া অহিংস আন্দোলনই করছে। কিন্তু গুরুঙ্গ, রোশনরা আড়ালে চলে যাওয়ায় আন্দোলন যে একটু ঝিমিয়ে পড়েছে, তা মোর্চার অনেক নেতাও একান্তে স্বীকার করেছেন।
অনেকেই ঘনিষ্ঠ মহলে জানাচ্ছেন, জাপ নেতা হরকাবাহাদুর ছেত্রী বা জিএনএলএফ নেতা মন ঘিসিঙ্গ যেখানে নিজেরাই ঘুরে ঘুরে আন্দোলন সংঘটিত করছেন, সেখানে মোর্চা সদস্যরা প্রধান নেতাদের সামনে না পেয়ে কিছুটা উদ্বেগে। তাঁরা এখন অপেক্ষায় রয়েছেন, আদালত কী রায় দেয়, তার জন্য।