পৈলানের কর্ণধার অপূর্ব সাহার বালিগঞ্জের এই বাড়িতে চলছে তল্লাশি।
সপ্তাহ তিনেক আগে কলকাতায় এসেছিলেন সিবিআই-এর স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা। নির্দেশ দিয়েছিলেন, ছোট যে চিটফান্ড কেলেঙ্কারির মামলাগুলো রয়েছে, তার তদন্ত দ্রুত শেষ করতে হবে। সেই নির্দেশ মেনেই যে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এগোতে চাইছে, বৃহস্পতিবার তারই ইঙ্গিত মিলল।
বছর তিনেক আগে পৈলান গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রায় দু’শো কোটি টাকা আর্থিক তছরুপের মামলা রুজু হয়। সেই তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেই পৈলান গ্রুপের একাধিক অফিসে তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। মামলা রুজু হওয়ার পর থেকেই ফেরার সংস্থার কর্ণধার অপূর্ব সাহা। এদিন সকালে অপূর্বর বালিগঞ্জের বাড়িতে পৌঁছয় গোয়েন্দাদের একটি দল। অন্য একটি দল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর, সন্তোষপুর এবং পৈলানের একাধিক অফিসে তল্লাশি শুরু করে। আর একটি দল পৌঁছে যায় সংস্থার বাঁকুড়ার অফিসে।
গোয়েন্দাদের একটি সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত শুরু করলেও পৈলান গ্রুপের এখনও অনেক তথ্যই হাতে আসেনি। যার ফলে তদন্তের গতিও শ্লথ হয়ে গিয়েছিল।এদিনের তল্লাশিতে বেশ কিছু নথিপত্র হাতে এসেছে গোয়েন্দাদের। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও খবর: নয়াদিল্লির সরাসরি নিয়ন্ত্রণেই সারদা-নারদ তদন্ত, আস্থানার বার্তায় জল্পনা
সারদা গোষ্ঠীর মতোই কালেক্টিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিম (সিআইএস)-এর মাধ্যমে আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা তুলে ছিল পৈলান গ্রুপ পার্ক ডেভলপমেন্ট অথরিটি।গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, দু’শো নয় আর্থিক তছরুপের পরিমাণ আরও বেশি। সিবিআই সূত্রে খবর, পৈলান গ্রুপ বাজার থেকে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা তুলেছিল। আমানতকারীদের থেকে টাকা তুলতে ডিবেঞ্চারও ইস্যু করেছিল এই সংস্থা। সেবি-র নিয়মের তোয়াক্কা না করেই অবৈধ কারবার ফেঁদে বসেছিল সংস্থা। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বেনামে জমিও কেনা রয়েছে বলে অভিযোগ। তার মধ্যে সিংহভাগ জমির নথিপত্র এখনও হাতে আসেনি গোয়েন্দাদের। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে জেরা বেশ কিছু সূত্র মিলেছে।
আরও খবর: প্রবেশিকায় এ বার সামিল যাদবপুরের শিক্ষকেরাও
এ ছাড়া পৈলানে আন্তর্জাতিক মানের স্কুল রয়েছে এই সংস্থার। একে একে খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ, আবাসন শিল্পে টাকা লগ্নি করতে শুরু করেছিল তারা। সেবি-র তরফে বেশ কয়েকবার নোটিসও দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, শাসক দলের বেশ কয়েকজন নেতার মদতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কমদামে জমি কিনে বিভিন্ন প্রকল্প গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। সিবিআইয়ের পাশাপাশি সেবি-ও তদন্ত শুরু করেছে। তবে, এখনও ফেরার সংস্থার কর্ণধার অপূর্ব সাহা। অন্য রাজ্যে তিনি গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন বলে গোয়েন্দাদের একটা অংশের ধারণা। বেশ কয়েকবার ভিন্ রাজ্যে তল্লাশি চালানো হলেও, এখনও গ্রেফতার করা যায়নি তাঁকে।
আরও খবর: পুরসভার গেস্টহাউসে জাঁকিয়ে দেহ ব্যবসা! ভয়ে কুলুপ তৃণমূল কাউন্সিলরের