ফাইল চিত্র
রোজভ্যালি কাণ্ডে ধৃত সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফের প্রভাবশালী তত্ত্বেই বিঁধল সিবিআই। সোমবার ভুবনেশ্বর হাইকোর্টে সিবিআই কৌঁসুলি কে রাঘচারিলু বললেন, ‘‘সুদীপবাবু এতটাই প্রভাবশালী, যে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতের অনুমতি নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে কাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন।’’ শুধু দেখা করাই নয়, সব রকম ভাবে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার আশ্বাসও যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন, সে কথাও রাঘবচারিলু আদালতে উল্লেখ করলেন। সিবিআই আইনজীবীর ব্যাখা, সুদীপবাবুর পাশে রয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। সুতরাং তিনি জামিনে মুক্ত হলে সাক্ষীদের অবস্থা কী হতে পারে, তা আদালত আন্দাজ করুক।
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সুদীপের সাক্ষাতের সময় সিবিআইয়ের দুই অফিসার সেখানে হাজির ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী এবং সুদীপের মধ্যে হওয়া কথোপকথন রেকর্ডও করা হয়েছে। সেই তথ্য আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। সুদীপবাবু সাংসদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাও। জামিনে মুক্ত হলে তিনি তথ্য লোপাট করতে পারেন বলে সিবিআই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: রোজ ভ্যালির টাকা কি দলেই ঢালতেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়?
সিবিআই এ দিন আদালতে জানিয়েছে, নিজের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে রোজভ্যালিকে বিভিন্ন সময়ে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নানা সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন। বিনিময়ে রোজভ্যালি কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু সুদীপকে বিপুল টাকা জুগিয়েছেন বলেও গোয়েন্দাদের অভিযোগ। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নাকি কলকাতার একটি কলেজকে গৌতম কুণ্ড ১ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। পরে ওই কলেজ কর্তৃপক্ষ ১ কোটি টাকা তৃণমূলের তহবিলে দান করে বলে দাবি করেছেন সিবিআই আইনজীবীরা।
সুদীপের শারীরিক অবস্থার নানা রিপোর্টও আদালতে জমা দিয়েছেন সিবিআই কৌঁসুলিরা। তাঁদের কথায়, সুদীপবাবুর অগ্ন্যাশয়ে সমস্যা রয়েছে। তিনি নিয়মিত বদহজমের ওষুধ খাচ্ছেন। ফিজিওথেরাপি করাচ্ছেন। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তাই তাঁকে জামিন দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই বলে সিবিআই-এর দাবি।
সুদীপের স্ত্রী নয়না বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দীর্ঘদিনের দলীয় সহকর্মীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। এতে কী ভাবে প্রভাবশালী তত্ত্ব উঠে এল তা বুঝতে পারছি না। আমার বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা রয়েছে। সুদীপের শারীরিক অবস্থার পর্যবেক্ষণ করার পর সঠিক বিচার পাব বলে আশা করছি।’’ আদালত এ দিন দু’পক্ষের বক্তব্যই শুনেছে। তবে এখনও কোনও রায় দেয়নি।