কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআইয়ের যাওয়া নিয়ে রাজ্যের আবেদন জরুরি ভিত্তিতে শুনতে রাজি হল না কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি শিবকান্ত প্রসাদ সোমবার জানিয়ে দেন, রাজ্যের আবেদন আদালতের তালিকায় নেই। আজ, মঙ্গলবার রাজ্যের আবেদন সংক্রান্ত মামলা তালিকাভুক্ত হলে শুনানি হবে।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত এ দিন আদালতে আর্জি জানানোর সময়ে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ এবং সিবিআইয়ের আইনজীবী চান্দ্রেয়ী আলম জানান, যে মামলার উল্লেখ করে সিপি-র বাড়িতে সিবিআইয়ের হাজির হওয়ার ঘটনাকে এজি প্রাসঙ্গিক করতে চাইছেন, সেটি একেবারেই আলাদা। তা ছাড়া, সিবিআইয়ের হাজির হওয়ার বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ আদালতে মঙ্গলবার শুনানি হবে। সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের একটি মামলায় রাজ্যের চার পুলিশ অফিসার—দিলীপ হাজরা, শঙ্কর ভট্টাচার্য, অর্ণব ঘোষ ও প্রভাকর নাথকে হাজিরা দেওয়ার নোটিস পাঠিয়েছিল গত বছর। নোটিস পাঠানোর তারিখ ৩০ নভেম্বর। কিন্তু তাঁদের হাজির হতে বলা হয়েছিল ৬ নভেম্বর। গত ডিসেম্বরে আদালতে বিষয়টি উত্থাপন করা হলে ওই নোটিসে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি প্রসাদ। সম্প্রতি সিপি-কেও অন্য একটি মামলায় নোটিস পাঠায় সিবিআই। কলকাতা পুলিশ জানায়, ওই নোটিসেও ত্রুটি ছিল। বিচারপতি প্রসাদের আদালতে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে সেই ত্রুটির উল্লেখ করেন এজি। বিচারপতি প্রসাদ এজিকে মৌখিক জানান, ১৩ ফেব্রুয়ারি ওই বিষয়ে তিনি শুনবেন।
এ দিন আদালতে এজির দাবি, ওই চার পুলিশ অফিসারের মামলার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সিপি-র বাড়িতে সিবিআইয়ের হাজির হওয়ার ঘটনার যে প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে, মঙ্গলবার তিনি তার প্রমাণ দেবেন।
আরও পড়ুন: মমতাকে রাস্তার লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনা খুব বড় ভুল হল না তো? চিন্তায় বিজেপি
সিবিআই জানায়, বালিগঞ্জ থানা এলাকায় অর্থ লগ্নি সংস্থা রোজ ভ্যালির একটি হোটেলে বছর দেড়েক আগে ভাঙচুর হয়। ভাঙচুরের তদন্ত চলাকালীন ওই সংস্থার কয়েকজন আমানতকারী আলিপুরের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, তাঁরা আমানতের টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। ম্যাজিস্ট্রেট তদন্তকারীকে নির্দেশ দেন, আইনমাফিক কাজ করতে। সেই নির্দেশকে হাতিয়ার করে ভাঙচুরের মামলার তদন্তকারী অফিসার সিবিআইয়ের এক তদন্তকারীকে সমন পাঠান ও বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব দিতে বলেন। ওই সমনকে চ্যালেঞ্জ করে সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে যায়। শীর্ষ আদালত সিবিআইকে নির্দেশ দেয়, হাইকোর্টে গিয়ে সমনকে চ্যালেঞ্জ করতে। তার ভিত্তিতে বিচারপতি প্রসাদের আদালতে মামলা দায়ের করে সিবিআই। সেই মামলা চলাকালীন গত ডিসেম্বরে বিচারপতি প্রসাদের আদালতে অর্ণব ঘোষদের পাঠানো নোটিসে ত্রুটির উল্লেখ করেন রাজ্যের কৌঁসুলি।