বেতনে রাজ্যের বাড়তি বোঝা পাঁচশো কোটি

বকেয়া বেতনের (এরিয়ার) পরিমাণ ধরলে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষকের জন্য প্রথম বছরেই ৫০০ কোটি টাকার মতো অতিরিক্ত খরচ করতে হবে রাজ্যকে। কোষাগারের যা হাল, তাতে এই এই বিপুল দায়ভার রাজ্যের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন উচ্চশিক্ষা দফতরের কর্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:০৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করে কলে়জ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর তার জেরে রাজ্যের ঘাড়ে চাপতে চলেছে বছরে অন্তত ২৫০ কোটি টাকার বাড়তি দায়। বকেয়া বেতনের (এরিয়ার) পরিমাণ ধরলে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষকের জন্য প্রথম বছরেই ৫০০ কোটি টাকার মতো অতিরিক্ত খরচ করতে হবে রাজ্যকে। কোষাগারের যা হাল, তাতে এই এই বিপুল দায়ভার রাজ্যের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন উচ্চশিক্ষা দফতরের কর্তারা।

Advertisement

আরও পড়ুন: বাধা উড়িয়ে রায়বেঁশে নাচের যুদ্ধে শবনমেরা

কলেজ-শিক্ষকদের শেষ বার বেতনবৃদ্ধি হয়েছিল ২০০৬ সালে। তখন বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করার কথা বলে বর্ধিত বেতনের ৮০% দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল কেন্দ্র। এ বার তারা জানিয়েছে, বর্ধিত বেতনের অর্ধেক তারা দেবে, বাকি অর্ধেক দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। কেন্দ্র বর্ধিত বেতন দেবে প্রথম ৫১ মাস। তার পরে পুরো দায়ই রাজ্যকে বহন করতে হবে। কেন্দ্রের ঘোষণা অনুযায়ী, নতুন বেতনক্রম বলবৎ হবে ২০১৬-র ১ জানুয়ারি থেকে। সেই হিসেবে ২০২০-র মার্চ মাস পর্যন্ত বর্ধিত বেতনের অর্ধেক কেন্দ্র দেবে। যার মধ্যে প্রায় দু’বছরের এরিয়ার বাবদ তাদের ২৫০ কোটি টাকার কাছাকাছি দেওয়ার কথা।

Advertisement

রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, গত বার বকেয়া বাড়তি বেতনের পরিমাণ ছিল ৯০০ কোটি টাকা। কেন্দ্র বলেছিল, চার কিস্তিতে সেই টাকা মেটানো হবে। কিন্তু বাস্তবে সেই টাকা আদায় করতে শিক্ষকদের আদালতে যেতে হয়। তার পরেও একটি কিস্তির টাকা এখনও বাকি।

তবে শুধু বকেয়া নয়, সামগ্রিক ভাবেই কেন্দ্র তার দেয় অংশ কমিয়ে দেওয়ায় উদ্বিগ্ন রাজ্য। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘এ তো ভাত দেওয়ার নাম নেই, কিল মারার গোঁসাই। কেন্দ্রকেই বাড়তি বোঝা বহন করতে হবে।’’

রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুটার সাধারণ সম্পাদক শ্রুতিনাথ প্রহরাজ জানান, কেন্দ্র যে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বর্ধিত বেতনের ৫০% দেবে এমন কোনও সরকারি নির্দেশ তারা এখনও পাননি। তাঁর দাবি, ‘‘পাঁচ বছর ধরে বর্ধিত বেতনের ১০০% কেন্দ্র দিক। যদি নতুন পে-স্কেল নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়, তা হলে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।’’

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) সহ সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ও জানালেন, তাঁদের দাবি বর্ধিত বেতনের পুরোটাই কেন্দ্র দিক। না হলে রাজ্য সরকার টাকা না থাকার কথা বলে নতুন বেতন কাঠামো চালু করতেই টালবাহানা করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন