জলশক্তি মন্ত্রকের বৈঠকে হাজির থাকতে হবে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের। প্রতীকি ছবি।
‘জল জীবন মিশন’ প্রকল্পে ‘স্কিম’ ভিত্তিক খরচের খতিয়ান তলব করল কেন্দ্রীয় সরকার। নবান্ন সূত্রে খবর, দিল্লি থেকে জানানো হয়েছে— হিসাব নিয়ে জলশক্তি মন্ত্রকের বৈঠকে হাজির থাকতে হবে দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের। ২৪ থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যভিত্তিক পর্যালোচনা বৈঠক হবে। পশ্চিমবঙ্গকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে ২৫ নভেম্বর।
রাজ্যের প্রশ্ন— প্রকল্পের শুরু থেকেই নিয়ম মেনে প্রতিদিনের খরচের তথ্য নির্দিষ্ট পোর্টালে তুলে দেওয়া হচ্ছিল। তা হলে হঠাৎ ফের কেন একই হিসাব তলব? প্রশাসনিক মহলের মতে, রাজ্যে কোথাও অতিরিক্ত ‘স্কিম’ নেওয়া হয়েছে কি না এবং কোনও ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় অনুদান নির্ধারিত অনুপাতে বেশি ব্যয় হয়েছে কি না— সেগুলি খতিয়ে দেখতেই এই নতুন পর্যালোচনা।
তবে জল জীবন মিশনের দায়িত্বে থাকা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আপত্তির যুক্তি ভিন্ন। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ এখনও পর্যন্ত ১৩,০২৭ কোটি টাকা, যেখানে রাজ্য ইতিমধ্যেই খরচ করেছে ১৫,২৫৯ কোটি। পাশাপাশি, এক কোটি বাড়িতে শুদ্ধ পানীয় জলের সংযোগ ইতিমধ্যেই নিশ্চিত হয়েছে। ওভারহেড ট্যাঙ্ক, জল শোধনাগার, পাম্পিং স্টেশন-সহ প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর রক্ষণাবেক্ষণে রাজ্যের অতিরিক্ত খরচ হয়েছে আরও ৪,৬০০ কোটি টাকা।
রাজ্যের দাবি— খরচের ক্ষেত্রে বাংলা অন্য রাজ্যের তুলনায় দক্ষতার নজির স্থাপন করেছে। কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতিটি বাড়িতে জল পৌঁছে দিতে খরচ অনুমান ছিল ৪৭ হাজার টাকা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে মাত্র ৩১,৭৭৫ টাকা খরচে বাড়িতে পানীয় জল সংযোগ সম্ভব হয়েছে, প্রায় ১৫ হাজার টাকা কমে।
এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্র কেন বাংলাকে আবার জবাবদিহি করতে ডাকছে— তা নিয়েই প্রশাসনিক মহলের অন্দরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে নবান্ন জানিয়ে দিয়েছে, নির্দিষ্ট তারিখে প্রতিনিধিরা দিল্লিতে হাজির হবেন এবং প্রয়োজনীয় নথি তুলে ধরবেন।