বিদেশি ইন্ধনও খতিয়ে দেখছে নয়াদিল্লি

এই অবস্থায় নেপালি ভাষাভাষী দার্জিলিঙের অস্থিরতাকে পরোক্ষে মদত দিতে নেপালের রাজনৈতিক শিবিরের ইন্ধন থাকতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১.২ শতাংশ মানুষ নেপালিভাষী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ০৩:৪৯
Share:

ফাইল চিত্র।

দার্জিলিঙের বর্তমান পরিস্থিতিতে পরোক্ষে ইন্ধন দিচ্ছে নেপালের রাজনৈতিক শিবিরের একটি অংশ— এমনটাই মনে করছে সাউথ ব্লক।

Advertisement

ইতিমধ্যেই রাজ্য গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, নেপালের রাস্তা ধরে মোর্চার কাছে রসদ এবং অস্ত্রশস্ত্রের সরবরাহ আসছে। কেন্দ্র বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিচার করছে বলে খবর। উত্তর-পূর্বের জঙ্গিদের মাধ্যমে মোর্চার হাতে যে বিদেশি অস্ত্র আসছে, তার পিছনে চিনের কোনও ভূমিকা রয়েছে কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কেন্দ্রের একটি সূত্রের বক্তব্য, দিল্লির শত চেষ্টা সত্ত্বেও নেপালে ভারত-বিরোধিতা ক্রমশ গভীর হচ্ছে। সে দেশের রাজনৈতিক দলগুলির একটা বড় অংশ দিল্লির বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া ক্ষোভকে জনমানসে ছড়িয়ে দিতে সক্রিয়। বিশেষ করে সে দেশের কমিউনিস্ট দল সিপিএন (ইউএমএল) প্রকাশ্য জনসভা করে ভারতের বিরোধিতা করছে। বলা হচ্ছে, মদেশীয়দের মাধ্যমে দিল্লি আসলে নেপালের স্থিতাবস্থাকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। এরা যদিও ক্ষমতায় নেই, কিন্তু কুড়ি বছর পরে হওয়া সে দেশের সাম্প্রতিক স্থানীয় নির্বাচনে যথেষ্ট ভাল ফল করছে।

Advertisement

এই অবস্থায় নেপালি ভাষাভাষী দার্জিলিঙের অস্থিরতাকে পরোক্ষে মদত দিতে নেপালের রাজনৈতিক শিবিরের ইন্ধন থাকতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১.২ শতাংশ মানুষ নেপালিভাষী। কিন্তু দার্জিলিঙে সংখ্যার হিসাবে নেপালিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। দার্জিলিং নিয়ে নেপালের আগ্রহ দীর্ঘদিনের।

আরও পড়ুন: পাশে শিবসেনাও, নিশ্চিন্ত রামনাথ

সরকারি তথ্য বলছে, ১৯৫০ সালে ভারত-নেপাল চুক্তির পর দার্জিলিঙে নেপালি জনসংখ্যা বেড়েছে হুহু করে। প্রথম দশ বছরেই বেড়েছিল প্রায় ৩০০ শতাংশ। ১৯৭০ সালের পর দার্জিলিঙের নেপালি বুদ্ধিজীবীরা আন্দোলন শুরু করেন নেপালি ভাষাকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য।

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই এই দাবি খারিজ করে দিলেও পরে অবশ্য নেপালি অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৮০ সালে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন শুরু হওয়ার সময়েও নেপালিভাষী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা ছিলেন অগ্রগণ্য। সুবাস ঘিসিঙ্গও দার্জিলিংকে নেপালের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন এক সময়ে।

এই প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক ভাবে সমস্যা বাড়ছে বিজেপি-র। শুরুতে দার্জিলিঙের অশান্তির ছবি তুলে ধরে মমতার ‘পাহাড় হাসছে’ প্রচারের রাজনৈতিক মোকাবিলা করার পরিকল্পনা করেছিল রাজ্য বিজেপি। কিন্তু পরে তারা বুঝতে পেরেছে, পাহাড়ের একটি আসনের জন্য, গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে হাওয়া দিলে রাজ্যের অন্য ৪১টি আসনে সমর্থন তো যাবেই। পাশাপাশি নেপাল অথবা চিনের উস্কানি বেড়ে গেলে তা সামলানো কেন্দ্রের দায়ের মধ্যে পড়বে।

এই অবস্থায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু মোর্চার প্রতিনিধিদের জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। এর বেশি আশ্বাস বস্তুত রাজনাথও এখন দিতে পারবেন কি না সন্দেহ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement