Kerosene Oil

পশ্চিমবঙ্গের কেরোসিন তেলের বরাদ্দ কমিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার

আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাই কোর্টে কেরোসিন তেল সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি রয়েছে। সেখানে এই সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও নির্দেশ পাওয়া যেতে পারে বলেই আশা করছেন কেরোসিন ডিলাররা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৪:০৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গের রেশন গ্রাহকদের জন্য কেরোসিনের বরাদ্দ এক ধাক্কায় কমিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। জানুয়ারি-মার্চ মাসের কোয়ার্টারের জন্য বিভিন্ন রাজ্যকে মোট কেরোসিন বরাদ্দ করে যে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল, তাতে পশ্চিমবঙ্গের কোনও উল্লেখ ছিল না। পরে ১৯ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক জানিয়ে দেয়, ওই মাসের বরাদ্দ ৫৮ হাজার কিলোলিটার তেল ওই মাসের মধ্যেই পুরোটা তুলে নিতে হবে। কিন্তু বাংলা ছাড়া অন্য রাজ্যগুলিকে সাধারণ নিয়মেই তিন মাস ধরে পুরো বরাদ্দ তোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। দেরিতে অনুমোদন পাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গ জানুয়ারি মাসে বরাদ্দের মাত্র ৩০ শতাংশ তুলতে পেরেছে। বাকিটা ফেব্রুয়ারি মাসে তোলার জন্য কেন্দ্রীয় পেট্রলিয়াম মন্ত্রকের কাছে রাজ্য খাদ্য দফতর চিঠি পাঠালেও উত্তর মেলেনি বলেই দফতর সূত্রে খবর।

Advertisement

খাদ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘প্রায় তিন-চতুর্থাংশ বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে রাজ্যে গরিব মানুষের জন্য তেলের জোগানে টান পড়তেই পারে। জানুয়ারি থেকেই পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক রাজ্যের কেরোসিন বরাদ্দ নিয়ে টালবাহানা করছিল। বরাদ্দ যে এতটা কমিয়ে দেওয়া হবে, তা বোঝা সম্ভব হয়নি।’’ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতি মাসে বরাদ্দ ছিল ৫৮ হাজার ৬৬৮ কিলোলিটার। ফেব্রুয়ারি থেকে তা কমে ১৪ হাজার ৩০৪ কিলোলিটার হচ্ছে। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসের মোট বরাদ্দ সম্পর্কে যে পরিমাণের কথা রাজ্য সরকারকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় পেট্রলিয়াম মন্ত্রক, তাতে দেখা যাচ্ছে, দু’মাসের জন্য মোট ২৮ হাজার ৬০৮ কিলোলিটার কেরোসিন বরাদ্দ করা হয়েছে। কেরোসিন ডিলারদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অশোক গুপ্ত বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের জন্য কোনও স্পষ্ট নীতি তৈরি না করে খেয়ালখুশি মতো বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে রাজ্যের গরিব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারণ, কাগজেকলমে যে দাবিই করা হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত গ্রাহকদের ভাগের কেরোসিনেই কোপ পড়বে। আর চাপ বাড়বে ডিলারদের উপর।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই এই কাজ করা হয়েছে। যে হেতু কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি তেল রাজ্য সরকারকে দেয়, তাই এ ক্ষেত্রেও উদ্যোগী হতে হবে রাজ্যকেই। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ২৯ হাজার ডিলারের কথা ভাবা হয়নি।’’

একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকায় গত কয়েক বছরে দেশের মধ্যে শুধু পশ্চিমবঙ্গের কেরোসিনের কোটা কমাতে পারেনি পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। ফেব্রুয়ারির শুরুতে কলকাতা হাইকোর্ট ওই মামলার চূড়ান্ত রায় দেয়। সেই নির্দেশে বলা হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গে কেরোসিন তেল বরাদ্দের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্ট নীতি তৈরি করুক। এর পরই, ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসের বরাদ্দ এক ঝটকায় কমিয়ে দেওয়া হল। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাই কোর্টে কেরোসিন তেল সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি রয়েছে। সেখানে এই সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও নির্দেশ পাওয়া যেতে পারে বলেই আশা করছেন কেরোসিন ডিলাররা।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন