আলাদা অডিট আবাস যোজনায়

কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে, সোশ্যাল অডিট দল গ্রামে গ্রামে ঘুরে যা পাবে, গ্রামসভার বৈঠক ডেকে বাসিন্দাদের সামনে তা জানাবে প্রকাশ্যেই।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৯ ০২:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

যেখানে যত কাটমানির কারবার হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার সবই ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পরে রাজ্য জুড়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছে। তার মধ্যেই কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রক ঘোষণা করেছে, এ বার আলাদা ভাবে গ্রামীণ আবাস যোজনার সোশ্যাল অডিট করা হবে। প্রকৃত উপভোক্তাদের কাছে প্রকল্পের সুবিধা ঠিকঠাক পৌঁছেছে কি না, তা জানাই এর উদ্দেশ্য। এত দিন ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের সঙ্গেই আবাস যোজনার অডিট সেরে নিত কেন্দ্র।

Advertisement

কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে, সোশ্যাল অডিট দল গ্রামে গ্রামে ঘুরে যা পাবে, গ্রামসভার বৈঠক ডেকে বাসিন্দাদের সামনে তা জানাবে প্রকাশ্যেই। সেখানে বাড়ি তৈরির দায়িত্বে থাকা পঞ্চায়েতকর্তা ও প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে হবে। অডিটে যা ধরা পড়বে, তা নিয়ে জবাবদিহি করতে হবে পঞ্চায়েতের কর্তাদের। সেই সব বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হবে ব্লক বা জেলা স্তরে। রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

সোশ্যাল অডিট বিষয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, অডিট দল তৈরি করতে হবে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তি, স্বনির্ভর দলের সদস্য, তফসিলি জাতি, জনজাতির সদস্যদের নিয়ে। যাঁরা আবাস যোজনার কাজ করেছেন, তাঁদের কেউ অডিট দলের সদস্য হতে পারবেন না। ১২টি প্রশ্নের জবাব উপভোক্তাদের কাছে জানতে হবে অডিট দলকে। তার ন’নম্বর প্রশ্নটি কাটমানি সংক্রান্ত। কেন্দ্র বলেছে, উপভোক্তাদের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে, বাড়ি বরাদ্দ, প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়া, জিয়ো ট্যাগিং বা পরিদর্শনের সময় কাউকে টাকা দিতে হয়েছে কি না। অন্য কোনও কারণে কেউ টাকা চেয়েছেন বা নিয়েছেন কি না, তা-ও নথিবদ্ধ করতে হবে।

Advertisement

রাজ্যের পঞ্চায়েতকর্তারা বিষয়টি নিয়ে কিছুটা শঙ্কিত। কারণ, দুর্নীতির অভিযোগের জেরে চলতি আর্থিক বছরের প্রথম চার মাস কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত রাজ্যে একটি বাড়ি তৈরিরও ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। সরকারি সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর জন অভিযোগ সেলে এই নিয়ে যত অভিযোগ এসেছে, তার বেশির ভাগই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ির বরাদ্দ থেকে নেওয়া ‘অংশ’ ঘিরেই।

গ্রামে বাড়ি তৈরির জন্য মাথাপিছু ১.২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে দিল্লি। এর উপরে উপভোক্তা চাইলে সহজ শর্তে আরও ৭০ হাজার টাকা ঋণ নিতে পারেন। এ ছাড়াও শৌচালয় তৈরির জন্য দেওয়া হয় ১২ হাজার টাকা।

পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় অবশ্য আবাস যোজনার আলাদা অডিটের বিষয়টিকে ধর্তব্যের মধ্যে আনছেন না। তিনি বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজেও সোশ্যাল অডিট হয়। তার পরেও আমরা দেশে এক নম্বর। আগেও বাড়ি তৈরিতে অডিট হয়েছে। এখন আলাদা করে করতে চাইলে করুক। আমরা এক নম্বরেই থাকব।’’

তবে কখন এই অডিট করানো হবে, তা নিয়ে পঞ্চায়েত দফতর চুপ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন