পুরনো সরিয়ে চেহারা বদলে ফেলল সিপিএম

শারীরিক অসুবিধার কারণে প্রত্যাশিত ভাবেই সিপিএমের জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিলেন গৌতম দেব। নতুন জেলা কমিটিরও আর সদস্য নন তিনি!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৫
Share:

সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নতুন সম্পাদক হলেন মৃণাল চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।

শুধু জেলা সম্পাদক পদে মুখ বদলই নয়। রীতিমতো প্রজন্মের পরিবর্তন ঘটে গেল উত্তর ২৪ পরগনা সিপিএমে!

Advertisement

শারীরিক অসুবিধার কারণে প্রত্যাশিত ভাবেই সিপিএমের জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিলেন গৌতম দেব। নতুন জেলা কমিটিরও আর সদস্য নন তিনি! সেই সঙ্গেই উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন অঞ্চলে দীর্ঘ কালের দাপুটে নেতা বলে যাঁদের চিনত মানুষ, তেমন এক ঝাঁক মুখ এ বার সরে গেল সামনের সারি থেকে! বাদের তালিকায় আছেন তড়িৎ তোপদার, রঞ্জিৎ কুণ্ডু, রঞ্জিৎ মিত্র, রবীন মণ্ডল, পল্টু দাশগুপ্ত, নারায়ণ মণ্ডল, শম্ভু দত্ত চৌধুরী, দুলাল চক্রবর্তী, নীহারেন্দু চট্টোপাধ্যায়, আব্দুস সাত্তার প্রমুখ। এঁদের মধ্যে ৭ জনকে নতুন জেলা কমিটিতে বিশেষ আমন্ত্রিত হিসাবে রাখা হয়েছে। আর পুরনোদের জায়গায় জেলা কমিটিতে এসেছে একগুচ্ছ নতুন মুখ।

জেলা সম্মেলনের শেষ দিনে রবিবার বরানগরের রবীন্দ্র ভবনে গৌতমবাবুর জায়গায় সিপিএমের নতুন জেলা সম্পাদক হয়েছেন বসিরহাটের মৃণাল চক্রবর্তী। বিদায়ী ভাষণে গৌতমবাবু বলেছেন, ৬ বছর আগে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসুদের পরামর্শে দলের পলিটব্যুরো থেকে বিশেষ অনুমতি এনে তিনি জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। কয়েক বছরে চেষ্টা করেছেন দলকে লড়াইয়ের ময়দানে রাখার। এখন শারীরিক কারণে ইচ্ছা থাকলেও অনেক কিছু করতে পারছেন না। তবে এই জেলাতেই ছাত্র রাজনীতি করে, পুলিশের তাড়া খেয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল। পদে না থাকলেও সহকারী ভূমিকায় তিনি থাকবেন। কমিটি থেকে বাদ যাওয়া অন্য প্রবীণ নেতাদেরও একই বার্তা দিয়েছেন গৌতমবাবু।

Advertisement

আরও পড়ুন: মমতার জেলা সফরে চাপে পুলিশ-প্রশাসন

কমিটিতে রদবদলের পাশাপাশিই কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্নে প্রকাশ কারাটদের কড়া বার্তা দিয়েছে গৌতমবাবুর জেলা! সম্মেলনে প্রতিনিধিদের বক্তৃতার রেশ ধরেই গৌতমবাবু এ দিন বলেছেন, কংগ্রেসের প্রতি তাঁদের কোনও বিশেষ মোহ বা প্রেম নেই! এ রাজ্যে বিজেপি এবং তৃণমূলের জোড়া আক্রমণের সামনে দাঁড়িয়ে তাঁরা বামেদের জন্য একটু শ্বাস নেওয়ার বাতাস খুঁজছেন। আর বিজেপি যে অন্য দলের চেয়ে আগ্রাসনে সম্পূর্ণ আলাদা, তা প্রতি দিন স্পষ্ট। এই বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেসের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না, এটাই জেলা সম্মেলনে বলতে চাওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পার্টি কংগ্রেসেই হবে, ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিদায়ী জেলা সম্পাদক। পরে প্রগতি সঙ্ঘের মাঠে সমাবেশেও বিজেপি ও তৃণমূলকে রুখতে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির সমন্বয়ের কথা বলেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এবং গৌতমবাবু।

মোট ৭০ জনের নতুন জেলা কমিটিতে ঝন্টু মজুমদার, পুলক কর, সুনীত ঘোষ, অতসী চক্রবর্তী, সোমনাথ সরকার, মলয় ভট্টাচার্য, ঋজিনন্দন বিশ্বাস, নীলু মুস্তারি খানুম, অসীম চক্রবর্তীর মতো নতুন মুখ প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। আরও মহিলা মুখ নেওয়ার জন্য ফাঁকা রাখা হয়েছে তিনটি জায়গা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন