সরলেন রবীন্দ্রনাথ, এলেন বিনয়-পার্থ

দল গঠনের প্রথম দিন থেকে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন জেলার সামনের সারির নেতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৯ ০১:৫৮
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

আশঙ্কা ছিলই। অবশেষে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতির পদ থেকে সরে যেতে হল রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। শুক্রবার দুপুরেই চাউর হয়ে যায়, রবীন্দ্রনাথকে সরিয়ে দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেল ৪টেয় সাংবাদিক বৈঠক করে রবীন্দ্রনাথ জানান, লোকসভা ভোটে হারের দায় স্বীকার করে তিনি দলনেত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। তার ঠিক এক ঘণ্টা পরেই কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠক করে দলনেত্রী জানিয়ে দেন সে কথা। তাঁর জায়গায় জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে। কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেই পার্থপ্রতিম রায়কে, যাঁকে লোকসভায় টিকিট দিতে চাননি খোদ রবীন্দ্রনাথ। ৯ জনের একটি কোর কমিটিও তৈরি করে দেওয়া হয়েছে দল পরিচালনার জন্যে। সেখানে জেলার আট জন বিধায়কের পাশাপাশি প্রাক্তন সাংসদ পার্থও রয়েছেন।

Advertisement

স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কথায়, যুবর যে লোকজন রবীন্দ্রনাথের উপরে ক্ষোভে নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে চলে গিয়েছিলেন, তাদের দলে টানতেই পার্থের গুরুত্ব বাড়ানো হল। পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন যুবর সংগঠনকেও জেলায় মজবুত করার বার্তা দেওয়া হল। বিনয়কৃষ্ণ এবং পার্থ, দু’জনই রাজবংশী। এ কথা উল্লেখ করে অনেকেই বলছেন, জেলায় নতুন নেতৃত্ব তৈরি করার পিছনে অন্য সমীকরণও থাকতে পারে।

দল গঠনের প্রথম দিন থেকে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন জেলার সামনের সারির নেতা। টানা ২২ বছর জেলা সভাপতির দায়িত্বও সামলেছেন। দলের অন্দরে বলা হয়, ২০১৬ সালে প্রায় একার হাতে বিধানসভা ভোটে সাফল্য নিয়ে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। সেই বছরই রেণুকা সিংহ মারা যাওয়ার পরে বলতে গেলে প্রায় একার সাংগঠনিক জোরে লোকসভায় জেতান পার্থপ্রতিম রায়কে। তখন রবীন্দ্রনাথ ও পার্থপ্রতিম কোচবিহারের রাজনীতিতে ‘কাকা-ভাইপো’ বলে পরিচিত ছিল। গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকে যুব ও মূলের দ্বন্দ্বের মধ্যে দিয়ে সেই পার্থর সঙ্গেই দূরত্ব তৈরি হয়েছিল রবীন্দ্রনাথের। তৃণমূল সূত্রে খবর, এ বারে যখন লোকসভায় প্রার্থী বাছাই হয়, পার্থর বদলে তিনি পরেশ অধিকারীকে যোগ্যতর বলে সুপারিশ করেন। কিন্তু শেষ অবধি পার্থর এক সময়ের সহযোগী এবং এক সময়ের যুব তৃণমূল নেতা নিশীথ প্রামাণিকের কাছে হারতে হয় রবীন্দ্রনাথকে।

Advertisement

এ দিন সাংবাদিক বৈঠকের সময়ে খানিকটা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তবে দ্রুত তা সামলে নিয়ে জানান, নতুন সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণের সঙ্গেই রয়েছেন তিনি। রয়েছেন ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। দলের দায়িত্ব পাওয়ার পরে সাংবাদিক বৈঠক করে বিনয়ও জানান, তিনি সবাইকে নিয়ে চলতে চান। সন্ধ্যায় তিনি এবং নতুন নেতৃত্ব গিয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করেন। বিরোধীরা অবশ্য বলেন, “মানুষ তৃণমূলের থেকে সরে গিয়েছেন। তাই যতই অদলবদল হোক কোনও লাভ হবে না। তৃণমূলের ক্ষমতা হারানো শুধু সময়ের অপেক্ষা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement