বাড়তি সময়ে কলেজ বদলালে বাড়বে সমস্যাই!

অনেকটা বাড়তি সময় পেয়ে যাওয়ায় অনেক ছাত্রছাত্রীই এ বার কলেজ পরিবর্তন করতে চাইবেন। প্রথম সারির কলেজে সংরক্ষিত পদ অসংরক্ষিত হয়ে গেলে পড়ুয়াদের সে-দিকে যাওয়ার প্রবণতা বাড়বে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৮ ০৫:৩৯
Share:

কলেজে শূন্য আসন পূরণের জন্য এক মাসেরও বেশি সময় বাড়িয়ে দেওয়ায় এত দিন ভর্তি হতে না-পারা অনেক ছাত্রছাত্রীর সুবিধা হবে ঠিকই। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত আখেরে বুমেরাং হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিভিন্ন কলেজের প্রধানেরা।

Advertisement

এমন আশঙ্কা কেন?

বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষদের বক্তব্য, অনেকটা বাড়তি সময় পেয়ে যাওয়ায় অনেক ছাত্রছাত্রীই এ বার কলেজ পরিবর্তন করতে চাইবেন। প্রথম সারির কলেজে সংরক্ষিত পদ অসংরক্ষিত হয়ে গেলে পড়ুয়াদের সে-দিকে যাওয়ার প্রবণতা বাড়বে। বিশেষ করে যাঁদের পর্যাপ্ত নম্বর আছে, তাঁরা এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চাইবেন। তাতে হাতে গোনা কয়েকটি কলেজ ছাড়া অন্যত্র ফের শূন্যতা বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন ওই অধ্যক্ষেরা। শুনতে অনেকটা ধাঁধার মতো লাগলেও তাঁদের বক্তব্য, শূন্যতা কাটানোর জন্য ভর্তির সময় বাড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত শূন্যতাই বাড়িয়ে দেবে!

Advertisement

এ বছর স্নাতক স্তরে ভর্তিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। গোটা ভর্তি প্রক্রিয়া জট পাকিয়ে যায়। প্রথমে ৬ জুলাই ছিল ভর্তির শেষ দিন। পরে উচ্চশিক্ষা দফতর সময়সীমা বাড়িয়ে করে ১০ জুলাই। কিন্তু আরও পরে দেখা যায়, প্রায় ৪০ হাজার আসন ফাঁকা থেকে গিয়েছে। মঙ্গলবার আশুতোষ কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কলেজে ভর্তির সময়সীমা ফের বাড়িয়ে দিয়ে ২০ অগস্ট করার কথা জানান।

শিক্ষা শিবিরের একাংশের বক্তব্য জুলাইয়ের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ করতে পারলে ভর্তি হয়ে যাওয়া পড়ুয়ারা কলেজ পরিবর্তনের ঝুঁকি নিতেন না। সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত যদি শুধু ভর্তি হতে না-পারা ছেলেমেয়েদের জন্য নেওয়া হত, তা হলেও সমস্যা এড়ানো যেত। সে-ক্ষেত্রে ভর্তি হয়ে যাওয়া ছাত্রছাত্রীরা আর ইচ্ছামতো কলেজ বদলের সুযোগ পেতেন না।

শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের মূল লক্ষ্য, যাঁরা ভর্তি হতে পারেননি, তাঁরা যেন ভর্তি হতে পারেন। যাঁদের বিকল্প রয়েছে, তাঁরা তো অন্য কোথাও ভর্তি হতেই পারেন।’’ এখানেই অনেকের আশঙ্কা। কারণ, অনেক পড়ুয়া ভর্তি হয়ে গেলেও কলেজ পছন্দ না-হলে তা পরিবর্তন করতে পারেন। ফলে অন্য একটি কলেজে আসন ভর্তি হলে খালি হবে কিছু কলেজের আসন।

বিবেকানন্দ কলেজ ফর উইমেনের অধ্যক্ষা সোমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘২০ অগস্ট পর্যন্ত কোনও ভাবেই ভর্তি প্রক্রিয়া চালাব না। পাঁচ দিনে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করে দেওয়া হবে।’’ ওই অধ্যক্ষার পর্যবেক্ষণ, উচ্চশিক্ষা দফতরের নির্দেশিকায় ২০ অগস্টের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে। ২০ অগস্ট পর্যন্ত ভর্তি চালিয়ে যেতেই হবে, এই ধরনের কোনও কথার উল্লেখ নেই। সিটি কলেজের অধ্যক্ষ শীতল প্রসাদ এবং লেডি ব্রেবোর্নের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার জানান, আজ, বৃহস্পতিবার আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, কোনও আসন খালি রাখা যাবে না। কিন্তু সেটা কোনও দিনই সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন কলেজ-প্রধানেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement