কলকাতা বিমানবন্দরে অমিত শাহকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা।
যত আসনের ব্যবস্থা, অতিথি তার চেয়ে বেশি। তার জেরে বিশৃঙ্খলা দেখা দিল অমিত শাহের জোড়া সভায়।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির বঙ্গ সফরের প্রথম দিনে হাওড়ার শরৎ সদনে বৈঠক ছিল দলের সোশ্যাল মিডিয়া ও তথ্যপ্রযুক্তি শাখার কর্মীদের সঙ্গে। সন্ধ্যায় জি ডি বিড়লা সভাঘরে ছিল আমন্ত্রিত বিশিষ্ট জনেদের সামনে শাহের বঙ্কিমচন্দ্র স্মারক বক্তৃতা। শরৎ সদনে হাজির হয়েছিলেন প্রায় আড়াই হাজার বিজেপি কর্মী। যা ওই প্রেক্ষাগৃহে আসন ক্ষমতার অনেক বেশি। স্বভাবতই ভিতরে ঢুকতে চেয়ে ধস্তাধস্তি বেধে যায়। শেষ পর্যন্ত প্রেক্ষাগৃগের সিঁড়িতে, মেঝেতেই বসে পড়েন কর্মীরা। আবার বিড়লা সভাঘরেও যা আসনের ব্যবস্থা, তার চেয়ে বেশি অতিথির কাছে পৌঁছে গিয়েছিল কার্ড! সেখানেও বিশৃঙ্খলা বাধে।। শাহ-সহ বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য এই ভিড়জনিত বিশৃঙ্খলাকে তাঁদের কর্মীদের উদ্দীপনা হিসেবেই দেখানোর চেষ্টা করছেন।
শরৎ সদনে এ দিন বিকালে শাহ ঢোকার কিছুক্ষণ পরেই হলের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। একটু দেরিতে সেখানে পৌঁছন মুকুল রায়। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। ধাক্কা দিলেও দরজা খোলেনি। পরে মুকুলবাবু ফোন করে ভিতরে থাকা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তবে তাঁকে ভিতরে যেতে দেওয়া হয়। আবার বিড়লা সভাঘরের বাইরে ভিড়় ও বিশৃঙ্খলার মধ্যে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সত্যব্রত (জলু) মুখোপাধ্যায়কে। দলের বর্তমান নেতৃত্বের মধ্যে বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী বা সায়ন্তন বসুরাও প্রথমে ঢুকতে পারছিলেন না ভিতরে। এক সময়ে কিছু লোক প্রেক্ষাগৃহের মেঝেতে বসে পড়তে যাচ্ছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষের তরফে অনুরোধ জানানো হয়, মেঝেতে যেন কেউ না বসেন।
বিজেপি নেতা শিশির বাজোরিয়া অবশ্য সভাঘরে গণ্ডগোলের দায় চাপিয়েছেন পুলিশের উপরে। তাঁর অভিযোগ, ভিআইপি-দের সফরে প্রেক্ষাগৃহে যত আসন খালি রাখা হয়, তার চেয়ে বেশি আসন ছেড়ে রাখা হয়েছিল। পুলিশ আগেভাগেই দরজা বন্ধ করে দেওয়ায় সমস্যা আরও জটিল হয়। আর স্বয়ং শাহ শরৎ সদনে তৃপ্তির সুরেই বলেছেন, ভিড়ের জন্য মাছি গলার জায়গাও এ দিন ছিল না। পাশাপাশিই বঙ্কিম বক্তৃতার আসরে নেতারা বলেছেন, এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী কালে তাঁরা স্টেডিয়াম ভাড়া নিয়ে সভা করবেন।
শাহ এ দিন পরামর্শ দিয়েছেন, লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যে ১০ হাজার সদস্যের হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করতে হবে। কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি যে জনভিত্তিক কাজ করছে, তা ওই গ্রুপে লিখে মানুষের কাছে প্রচার করতে হবে। বিজেপি সূত্রের খবর, সভাপতি বলেছেন বোমা-গুলির বিরুদ্ধে ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটস্অ্যাপের মাধ্যমে লড়াই চালাতে হবে।