Sexual Harassment

‘নির্জনতার সুযোগ নিয়ে গায়ে হাত দিয়েছিলেন’, যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত মহীনের এক ‘ঘোড়া’ রঞ্জন ঘোষাল

ঘটনার সূত্রপাত গত  শনিবার। সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের কুকর্ম নিয়ে যখন সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল, তখনই মুখ খোলেন দেবলীনা। ফেসবুকে তিনি রঞ্জন ঘোষালের ছবি শেয়ার করে প্রথমে লেখেন, ‘‘এই রকম আরও অনেক সুদীপ্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে আমাদের আশেপাশে। সবার মুখোশ খোলা দরকার।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৯ ১৮:০৫
Share:

মহীনের ঘোড়াগুলির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রঞ্জন ঘোষাল। ছবি-ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

দিন কয়েক আগেই সামনে এসেছিল নাট্য ব্যক্তিত্ব সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ। অভিনয় শেখানোর নামে যৌন হেনস্থার সেই অভিযোগের রেশ রয়েছে এখনও। তার মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সামনে আসছে একের পর এক হেনস্থার ঘটনা। এ বার যৌন হেনস্থার ঘটনায় নাম জড়াল বাংলা ব্যান্ড ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রঞ্জন ঘোষালের। তাঁর বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন দেবলীনা মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার। সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের কুকর্ম নিয়ে যখন সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল, তখনই মুখ খোলেন দেবলীনা। ফেসবুকে তিনি রঞ্জন ঘোষালের ছবি শেয়ার করে প্রথমে লেখেন, ‘‘এই রকম আরও অনেক সুদীপ্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে আমাদের আশেপাশে। সবার মুখোশ খোলা দরকার।’’

এর কিছু ক্ষণ পরেই তিনি সরাসরি অভিযোগ আনেন রঞ্জন ঘোষালের বিরুদ্ধে। তাঁর ছবি দিয়েই এই প্রজন্মের মেয়েদের রঞ্জন ঘোষাল বিষয়ে সতর্ক হতে অনুরোধ জানান দেবলীনা। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, রঞ্জন ঘোষাল ২০০৩-২০০৪ সাল নাগাদ তাঁকে যৌন হেনস্থা করেন।

Advertisement

আরও পড়ুনঃদুর্গাপুজোতেই সেঞ্চুরি, আর কালীপুজোয়?
আরও পড়ুনঃকালীপুজো বৈঠকের কেন্দ্রেও শব্দবাজি

ঠিক কী হয়েছিল? দেবলীনা জানাচ্ছেন, ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র ওই গায়কের সঙ্গে বহু দিনের পারিবারিক যোগাযোগ ছিল তাঁদের। বছর ১৫ আগে এক বার কাজের সূত্রে রঞ্জনের অফিসে যেতে হয়েছিল তাঁকে। সে সময়ে অফিসে অন্য কেউ ছিলেন না। রঞ্জন তাঁকে সোফায় তাঁর পাশে বসতে বলেন। অফিসের নির্জনতার সুযোগ নিয়ে সেই সময়ে দেবলীনার গায়ে তিনি হাত দেন বলে অভিযোগ। তাঁর কাঁধে মুখ ঘষতে থাকেন রঞ্জন। দেবলীনার দাবি, গোটা ঘটনায় তিনি স্তম্ভিত হয়ে কিছুই বলতে পারেননি প্রাথমিক ভাবে। হঠাৎ ডোরবেল বেজে ওঠায় রঞ্জন উঠে গেলে সে দিন পালিয়ে বাঁচেন তিনি।

দেবলীনাদেবীর অভিযোগের পোস্টগুলি।

দেবলীনার কথায়, ‘‘সেই দু্ঃসহ স্মৃতি আজও তাড়া করে বেড়ায়।’’ সে দিন কি মুখ খুলেছিলেন তিনি? মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘মুখ সে দিনই খুলেছিলাম। তবে, সেই সময় তো সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। কাউকে পাশে পাইনি। আমার চেনা এক জনের সঙ্গেও এমনটা করেছিলেন উনি। তিনিও চেপে যান। 'রঞ্জনকাকুর পরিবার ভেঙে যাবে'এমনটাই বোঝানো হয়েছিল আমাকে।’’ তাঁর আরও দাবি, সরকারি আইনজীবী নিয়ে রঞ্জনের নামী আইনজীবীর সঙ্গে লড়তে পারেননি তিনি। মামলা তুলে নিতে বাধ্য হন। সে যাত্রায় থেমে গেলেও হার মানেননি দেবলীনা। লিখিত ভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেছিলেন রঞ্জন ঘোষালকে।

প্রায় ১৫ বছর আগের এই ঘটনা দেবলীনা মুখোপাধ্যায় ফের এক বার ফেসবুকে শেয়ার করার পরে নতুন প্রজন্মের অনেকেই রঞ্জন ঘোষালের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। শেয়ার করেছেন ব্যক্তিগত কথোপকথনের স্ক্রিনশটও।

এখনই রঞ্জনের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা শুরু করার কথা ভাবছেন না তিনি। তবে নতুন প্রজন্মের সাহস তাঁকে ভরসা দিয়েছে, শক্তি দিয়েছে, এ কথা স্বীকার করছেন তিনি। ‘‘পিছিয়ে আসার প্রশ্নই নেই,’’— স্পষ্ট অবস্থান দেবলীনার।

এ দিন আনন্দবাজারের তরফে বার বার রঞ্জন ঘোষালের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে। কয়েক বার কেটেও দিয়েছেন। ফোন ধরেননি। জবাব দেননি হোয়াটস্‌অ্যাপেরও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement