সিইও অফিসে মুশকিল আসান হোয়াটসঅ্যাপ

লাল ফিতের ফাঁস এড়িয়ে সেই পদ্ধতিতে গতি আনতে এ বার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপকে হাতিয়ার করেছে দফতর।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩২
Share:

ভোটার তালিকা সংযোজন-বিয়োজনে নতুন পদ্ধতি বলবৎ করেছিল রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)-এর দফতর। লাল ফিতের ফাঁস এড়িয়ে সেই পদ্ধতিতে গতি আনতে এ বার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপকে হাতিয়ার করেছে দফতর।

Advertisement

‘এক ভোটার এক এপিক (পরিচয়পত্র)’ ব্যবস্থা চালু করতে ‘ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার নেটওয়ার্ক’ (ইআরও-নেট) নামে একটি ওয়েব-নির্ভর পোর্টাল ব্যবহার করে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে পশ্চিমবঙ্গেও ‘ইআরও-নেট’ চালু হয়। তা করতে গিয়ে ভোটার তালিকা সংযোজন-বিয়োজনের সঙ্গে যুক্ত পদস্থ আধিকারিক-কর্মীদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। এত দিন এই ধরনের সমস্যার কথা লিখিত ভাবে সিইও দফতরকে জানাতেন জেলাশাসক বা অতিরিক্ত জেলাশাসকেরা। অনেক ক্ষেত্রে ফোনে সিইও দফতরকে জানাতেন তাঁরা। কিন্তু তা অনেকটাই সময়সাপেক্ষ। সেই সময় নষ্ট থেকে বাঁচতেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের ভাবনা বলে জানান সিইও দফতরের কর্তারা। এক কর্তার কথায়, ‘‘ফোনে বা লিখিত ভাবে আমাদের কাছে পৌঁছতে সময় লাগবে। আমরা চাই না, কোনও ভাবে সময় নষ্ট হোক।’’

জেলাগুলির নোডাল অফিসার অর্থাৎ ওসি (নির্বাচন), সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার, অ্যাসিস্ট্যান্ট সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে তৈরি হয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। ‘ইআরও-নেট’ চালু করতে যে-সব সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল, সেগুলি সরাসরি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারেরা। তা দেখার পরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেই সমাধান জানাচ্ছিলেন সিইও-কর্তারা। সেই সমস্যা এবং সমাধান এক জায়গায় আনার পরে সিইও দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, এই নিয়ে একটি বড়সড় বই তৈরি হতে পারে।

Advertisement

এত দিন পর্যন্ত ভোটার তালিকা সংযোজন-বিয়োজনে ইলেক্টোরাল রোল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইআরএমএস) ব্যবহার করা হত। সে-ক্ষেত্রে অ্যাডমিন ছিল সিইও দফতর। ‘ইআরও-নেট’-এ অ্যাডমিন কিন্তু জাতীয় নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি, সার্ভারের স্পিডও কখনও কখনও বেকায়দায় ফেলেছিল জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাদের। এই পরিস্থিতিতে করণীয় বাতলেছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। একই ভাবে সব রাজ্যকে নিয়ে ‘ইআরও-নেট’ চালু করতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছিল কমিশন। তাতে রাজ্যগুলির সমস্যার সমাধান করেছিল তারা। ‘ইআরও-নেট’ ব্যবহার করে একসঙ্গে দুই রাজ্যের ভোটার তালিকায় কারও নাম রাখার ঘটনা আটকানো সহজ হয়েছে বলে দাবি কমিশনের কর্তাদের। একটি রাজ্যে বিয়োজন না-হওয়া পর্যন্ত অন্য রাজ্যে ইআরও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নথিপত্রে সম্মতি দিলেও তালিকায় নাম উঠবে না। কারণ, বিয়োজনের পরেই সংযোজন হবে। এ ভাবেই ৩৭ লক্ষ নাম যোগ-বিয়োগ করা হয়েছে ।

হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের পাশাপাশি রাত জেগে কিংবা ভোরবেলা অফিসে পৌঁছে ‘ইআরও-নেট’ সক্রিয় করেছেন বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্তেরা। কারণ, সার্ভার স্পিড অনেক বেশি সকাল বা রাতের দিকে বেশি থাকত। তাতে সাফল্য মিললেও তা নিয়ে এখনই উছ্বসিত হতে নারাজ সিইও দফতরের কর্তারা। তাঁদের মতে, ১৪ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। তার আগে এই সব বিষয়ে তেমন কিছু বলা নেই। গত ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংযোজন বা বিয়োজনের কাজ চলেছিল। ভোটার তালিকা ত্রুটিমুক্ত করতে একাধিক বার তা খতিয়ে দেখছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। তার পরেই সেই তালিকা ছাপানো শুরু হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন