ক্ষোভ জানিয়েই বিদায় নিশীথার

রাজ্য আইন দফতর সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ জন প্রবীণ বিচারপতি নিয়ে তৈরি হয় কলেজিয়াম। নিয়ম হল, বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের মতামত-সহ হাইকোর্ট তার সুপারিশ পাঠায় কলেজিয়ামের কাছে। কলেজিয়াম তার মতামত-সহ সুপারিশ পাঠায় আইন মন্ত্রকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:৪৯
Share:

নিশীথা মাত্রে

বিদায়বেলায় সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে। আজ, মঙ্গলবার তিনি কর্মজীবন থেকে অবসর নিচ্ছেন। সোমবার তাঁর বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিচারপতি মাত্রে বলেন, ‘‘বম্বে হাইকোর্ট থেকে কলকাতা হাইকোর্টে কেন আমায় বদলি করা হল, সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম আজও তার কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি!’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘কোথায় বদলি হতে চাই, আমার কাছে তার কোনও ‘অপশন’-ও দেয়নি কলেজিয়াম।’’

Advertisement

রাজ্য আইন দফতর সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ জন প্রবীণ বিচারপতি নিয়ে তৈরি হয় কলেজিয়াম।

নিয়ম হল, বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের মতামত-সহ হাইকোর্ট তার সুপারিশ পাঠায় কলেজিয়ামের কাছে। কলেজিয়াম তার মতামত-সহ সুপারিশ পাঠায় আইন মন্ত্রকে। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতর হয়ে সুপারিশের ফাইল যায় রাষ্ট্রপতির কাছে। তিনি সই করলে তবেই কোনও হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগ হয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রেও কলেজিয়ামই নামের সুপারিশ পাঠায় কেন্দ্রের কাছে। ঠিক একই ভাবে কোনও বিচারপতিকে বদলির ক্ষেত্রেও কলেজিয়াম সুপারিশ করে। আইন দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, সাধারণ ভাবে কলেজিয়ামের সুপারিশ মেনেই নিয়োগ ও বদলি হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: বন্ধে নাকাল পাহাড়ে ভরসা এটিএম দাজুরা

হাইকোর্ট সূত্রের খবর, আইনজীবী থেকে প্রথমে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে ২০০৩ সালে বম্বে হাইকোর্টে কাজে যোগ দেন নিশীথা মাত্রে। সেখানে কয়েক বছর কাটানোর পরে তাঁকে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে বদলি করা হয় ২০১১ সালে। তার পর ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে অবসর নেওয়ার দিন পর্যন্ত তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব সামলালেন।

মহালয়ার জন্য মঙ্গলবার আদালত ছুটি থাকায় সোমবারই ছিল তাঁর শেষ কাজের দিন। হাইকোর্টের আইনজীবীদের তিনটি সংগঠন তাই এ দিনই তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা দেয়। সেখানেই বিভিন্ন কথার মাঝে কলেজিয়াম নিয়ে তাঁর মুখ থেকে ক্ষোভ বেরিয়ে আসে। বলেন, ‘‘মানসিক ভারাক্রান্ত হয়ে এক সময় ভেবেছিলাম বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেব। কিন্তু পরিবারের সদস্যেরা আমাকে নিষেধ করেন।’’ কলকাতা হাইকোর্টের অলিন্দে এই বদলি নিয়ে একাধিক মন্তব্য তাঁর কানে এসেছে বলেও জানান বিচারপতি মাত্রে। তবে একই সঙ্গে জানান, এত দিন ধরে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীদের সঙ্গে কাজ করে তিনি আনন্দ পেয়েছেন।

কিন্তু তাঁর অভিযোগ কতটা যুক্তিযুক্ত?

কলকাতা হাইকোর্টের এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এবং প্রবীণ আইনজীবীদের একাংশের দাবি, বিচারপতি মাত্রের অভিযোগ ঠিক নয়। কাউকে বদলি করার আগে তাঁর মতামত নেওয়া অথবা বদলির কারণ ব্যাখ্যা করতে বাধ্য নয় কলেজিয়াম। আইনজীবীদের অন্য একটি অংশ অবশ্য মনে করেন, এটা নিয়ম না হলেও রীতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন