—প্রতীকী ছবি।
টানা পতনের পরে সামান্য উত্থান থার্মোমিটারের পারদে। তবে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রবিবারেও স্বাভাবিকের তুলনায় দু’ডিগ্রি নীচেই ছিল। তাই বাঙালিকে সুখবর শোনাচ্ছেন আবহবিদেরা। বলছেন, বর্ষশেষ এবং নববর্ষের সন্ধিক্ষণে জোরদার ঠান্ডারই বার্তা উত্তুরে হাওয়ায়। রংবেরঙের সোয়েটার, টুপি, মাফলার জড়িয়েই বর্ষশেষের উৎসবে মাতোয়ারা হওয়া যাবে। কনকনে ঠান্ডা হাওয়ায় নরম রোদ মেখেই শুরু হবে নতুন বছর।
আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, নিম্নচাপ-ঘূর্ণাবর্ত বা দখিনা বাতাসের বাধা নেই। তাই মসৃণ পথ পেয়ে শনশনিয়ে বইছে উত্তুরে হাওয়া। কাশ্মীর, হিমাচলের বরফের উপর দিয়ে বয়ে আসার ফলে আরও কনকনে ঠান্ডা হয়ে উঠছে সে। তাই এমন শীত। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের খবর, শনিবারের তুলনায় এ দিন রাজ্যের প্রায় সর্বত্রই রাতের তাপমাত্রা সামান্য বেড়েছে। তা সত্ত্বেও কয়েকটি জেলায় বয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। দুপুরেও পথেঘাটে মালুম হয়েছে উত্তুরে হাওয়ার কামড়। তুষারপাত না-হলেও দার্জিলিঙের দিকে ছুটেছেন পর্যটকেরা। মিরিকে, ডেলো বা দার্জিলিঙের পথে ছাদে বা গাছের পাতায় লেগে থাকা তুষারকণা থেকেই আশ মিটিয়েছেন তাঁরা।
এ দিন কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে দু’ডিগ্রি কম। কিন্তু পশ্চিমাঞ্চলে শীতের দাপট অব্যাহত। পানাগড়, পুরুলিয়া, শ্রীনিকেতনে রাতের তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে ৬-৭ ডিগ্রির কাছেপিঠে। তুষারপাত কমতেই তাপমাত্রা সামান্য বে়ড়েছে ‘পাহাড়ের রানি’র। দার্জিলিঙে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২.৪ ডিগ্রি।
কলকাতা থেকে শনিবার রাতে শিলিগুড়িতে পৌঁছন সম্বর সাহা। এ দিন সাতসকালে পাড়ি দেন দার্জিলিং। তাঁর কথায়, ‘‘আর তর সইছে না!’’ শিলিগুড়ির চম্পক দেবনাথ ফি-শীতে দার্জিলিং যান। কিন্তু অন্যান্য বছরের মতো এ বারেও তুষারপাত দেখার সুযোগ ফস্কেছেন। ‘‘পাহাড়ে পর্যটকের ভি়ড় বাড়ছে,’’ বললেন ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড টুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবাশিস মৈত্র।
বাঙালির সাবেক ‘পশ্চিম’, বিহার-ঝাড়খণ্ডেও হাড় কাঁপাচ্ছে শীত। গয়ায় রাতের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ২.৭ ডিগ্রিতে। ভাগলপুরে ৭.৪, পটনায় ৬.৪ এবং পূর্ণিয়ায় ছ’ডিগ্রিতে নেমেছে তাপমাত্রা। রাঁচী, ডাল্টনগঞ্জ, জামশেদপুরেও শীতে ঠকঠকিয়ে কাঁপছেন বাসিন্দারা। শৈত্যপ্রবাহ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে মধ্য, উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে। সেখানে ঘাসের ডগায় শিশিরকণা জমে বরফকুচির চেহারা নিচ্ছে। দেশের সমতল এলাকার মধ্যে তাপমাত্রা সব থেকে কম রাজস্থানের ভিলওয়ারায় (০.৬ ডিগ্রি)। হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লিতেও কনকনে ঠান্ডায় কাবু বাসিন্দারা। শ্রীনগরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা একটু বেড়েছে, তবে তা হিমাঙ্কের নীচেই আছে।