নারায়ণস্বামী থেকে মমতা, চিনতে চায় চিন

বাংলার সরকারে আসার পরে এই প্রথম চিন সফরে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিনের কমিউনিস্ট সরকারের আমন্ত্রণেই সে দেশে বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদল নিয়ে যাচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতার আসন্ন ওই সফরের তিন দিন আগেই দিল্লিতে শিল্প ও বাণিজ্য জগতের প্রতিনিধি এবং নানা রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বকে মতামত আদানপ্রদানের আসরে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন চিনা কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৮ ০২:০২
Share:

নরেন্দ্র মোদী আর শি চিনপিঙের সাক্ষাৎ হচ্ছে বারবার। চিনও দ্রুত চিনে নিতে চাইছে ভারতকে!

Advertisement

বাংলার সরকারে আসার পরে এই প্রথম চিন সফরে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিনের কমিউনিস্ট সরকারের আমন্ত্রণেই সে দেশে বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদল নিয়ে যাচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতার আসন্ন ওই সফরের তিন দিন আগেই দিল্লিতে শিল্প ও বাণিজ্য জগতের প্রতিনিধি এবং নানা রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বকে মতামত আদানপ্রদানের আসরে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন চিনা কর্তৃপক্ষ। এ দেশে চিনের রাষ্ট্রদূত লুয়ো চাওহুই সেই আসরের অন্যতম মুখ। কয়েক দিন আগেই পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামীর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে চিনে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছেন লুও। চিনের ইউনান প্রদেশের দালি শহরের সঙ্গে তাঁরা পুদুচেরির বিশেষ সম্পর্ক গড়তে চান।

রাজ্যে রাজ্যে চিনা কর্ত়ৃপক্ষের তৎপরতাতেই স্পষ্ট, ভারতের সঙ্গে অর্থবহ আদানপ্রদানের বহর তাঁরা আরও বাড়াতে চান। মমতা সিঙ্গাপুর হয়ে বেজিং উড়ে যাচ্ছেন ২২ জুন। তাঁর সফরসূচিতে আছে চিনের বাণিজ্যিক রাজধানী সাংহাইও। মমতার চিন-যাত্রার তিন দিন আগেই ১৯ জুন দিল্লিতে বাণিজ্য ও রাজনীতির ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে মুখোমুখি আসরের আয়োজন হচ্ছে চিনের তরফে। আবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী চিনে যাওয়ার মাসখানেক আগেই মমতার শহরে এসে বাম দলগুলির নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে গিয়েছে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) প্রতিনিধিদল। সংবিধান সংশোধন-সহ বেশ কিছু যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত হয়েছে গত অক্টোবরে সিপিসি-র পার্টি কংগ্রেসে। তখন থেকেই ভারতের মতো দেশ এবং বিভিন্ন দলের সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিসি। মে মাসে কলকাতায় এসে সিপিএম, সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক ও আরএসপি-র দফতরে গিয়ে রাজনৈতিক আদানপ্রদান এবং প্রশ্নোত্তরের আসর সেরেছেন সিপিসি-র প্রতিনিধিরা। তারও পরে সম্প্রতি সিপিসি-র ডাকেই বেজিং ঘুরে এসেছেন সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, ফ ব-র পি কাতিরাবনেরা।

Advertisement

কলকাতার বৈঠকে হাজির থাকা এবং দিল্লির আসরে আমন্ত্রিত ফ ব-র সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাসের কথায়, ‘‘শি-র সঙ্গে মোদীই নিবিড় যোগাযোগ রাখছেন। এখানে বাকিদের সঙ্গেও চিনারা সম্পর্ক ভাল রাখবে, এটাই স্বাভাবিক।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব জানাচ্ছেন, কলকাতার বৈঠকে বাংলার পরিস্থিতির বিশেষ কোনও দিক নিয়ে তেমন কথা ওঠেনি। তবে সূত্রের খবর, এ দেশের এক একটি রাজ্যের সঙ্গে তাদের এক একটি প্রদেশের ‘সিস্টার রিলেশনশিপ’ গড়ে তুলতে এখন বিশেষ আগ্রহী চিন। যে কারণে মমতাকে স্বাগত জানাতে বেজিংয়ে থাকবেন কুনমিঙের মেয়র। একই কারণে কয়েক মাস আগে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার কাছে গিয়েছিলেন চিনের সিচুয়ান প্রদেশের প্রতিনিধিরা।

কিন্তু বাংলার কমিউনিস্ট ঘাঁটি যখন ভূপতিত, সে সময়ে মমতার চিন-যাত্রাকে সিপিএম কী ভাবে দেখছে? দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মতে, ‘‘নানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেই ওরা আমন্ত্রণ জানায়। এ বার কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী যাচ্ছেন। প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ভাল হোক, আমরা সব সময় চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন