ডাকঘরে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে গ্রেফতার। —প্রতীকী চিত্র।
পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে এক উপডাকঘরে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল সিআইডি। ধৃত হৃদয়রঞ্জন মাইতি পোস্ট অফিসের এজেন্ট হিসাবে কাজ করতেন। পোস্ট অফিসের ভুয়ো পাসবই তৈরির অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বুধবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হলে বিচারক চার দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার সূত্রপাত ২০২৩ সালে। ওই সময় জামালপুরের বাসিন্দা সুরজিৎ পাল থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, ২০২১ সালে জামালপুর উপডাকঘরে ১২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা স্থায়ী আমানতে (ফিক্সড ডিপোজ়িট) জমা করেছিলেন। ডাকঘরে টাকা গচ্ছিত রেখে নিশ্চিন্তেই ছিলেন পাল পরিবারের সদস্যেরা। কিন্তু আমানতের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার এক বছর আগেই সুরজিতের মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন টাকার প্রয়োজন হলে স্থায়ী আমানতের টাকা তোলার জন্য উপডাকঘরে যান সুরজিৎ। পরিবারের অভিযোগ, সব নথি নিয়ে গেলেও তৎকালীন পোস্টমাস্টার তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। ওই ডাকঘরে পাল পরিবারের সদস্যদের কোনও স্থায়ী আমানত নেই বলে দাবি করেন তিনি। এমনকি তাঁদের ডাকঘর থেকে একপ্রকার তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।
প্রাথমিক ভাবে ওই মামলার তদন্ত চালাচ্ছিল পুলিশ। কিন্তু পুলিশি তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সুরজিৎ। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্তভার যায় সিআইডি হাতে। তদন্তের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে উঠে আসে হৃদয়রঞ্জনের নাম। টাকা নয়ছয়ের ঘটনায় হৃদয়রঞ্জনের সক্রিয় যোগ রয়েছে বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। সেই সূত্র ধরেই মঙ্গলবার জামালপুরে হানা দেয় সিআইডি। জামালপুর উপডাকঘরের অদূরেই বিশ্বাসপাড়ায় বাড়ি হৃদয়রঞ্জনের। মঙ্গলবার বিকেলে সেই বাড়িতে অভিযান চালান তদন্তকারীরা এবং গ্রেফতার করেন ৭৩ বছর বয়সি হৃদয়কে। তিনি ভুয়ো পাসবই তৈরি এবং সাধারণ মানুষের টাকা নয়ছয়ের ঘটনায় তিনি জড়িত ছিলেন বলে সন্দেহ সিআইডি আধিকারিকদের।