ফাইল চিত্র।
শিশু পাচারে অভিযুক্ত চন্দনা চক্রবর্তীকে গ্রেফতারের ঠিক ৮৯ দিনের মাথায় বুধবার জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে চার্জশিট পেশ করল সিআইডি। চন্দনা ছাড়াও প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী জুহি চৌধুরী, জলপাইগুড়ির তৎকালীন জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সস্মিতা ঘোষ, তাঁর স্বামী দার্জিলিং-এর ডিসিপিও মৃণাল ঘোষ, দার্জিলিং সিডব্লিউসি-র সদস্য দেবাশিস চন্দ, চন্দনার ভাই মানস ভৌমিক-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে চার্জশিটে। জুহি যে বিজেপির সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ও দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, সে কথাও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।
রূপা বলেন, ‘‘শুনেছিলাম এক ‘বড় লোক’ বলেছিলেন, আসলটাকে পাসনি, উচ্চিংড়েটাকে আটকে রাখ। আজ বোঝা গেল, জুহিকে নব্বই দিন আটকে রাখাই লক্ষ্য ছিল। সিআইডি কি ঘুমোচ্ছিল? এ বারে চার্জশিটে আমার নাম দিল বা অন্য কারও নাম, তাতে কী আসে যায়?’’
৯০ দিনের মাথায় চার্জশিট না দিলে অভিযুক্ত জামিন পেয়ে যেতে পারেন। তাই তার আগে চার্জশিট দেওয়া হবে বলে সিআইডি জানিয়েই রেখেছিল। তিরিশ পাতার চার্জশিটে ৭০ জন সাক্ষীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে৷ সেই সঙ্গে সাত অভিযুক্তকেই হেফাজতে নিয়ে শুনানির জন্য আবেদনও করেছে সিআইডি৷ হোম-কাণ্ডের অন্য একটি মামলায় অবশ্য আদালতের নির্দেশে চন্দনা ও সোনালী মণ্ডলকে এখনই দশ দিনের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ৷
২০১৫-র অগস্টে সিডব্লিউসি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চন্দনার হোম বিমলা শিশুগৃহের নানা অনিয়ম নজরে আসে৷ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওই হোম থেকে ১৭টি শিশুকে বেআইনি ভাবে দত্তক দেওয়া নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে চিঠি পাঠান সিডব্লিউসি-র এক সদস্য৷ ওই বছরই জুনে সিডব্লিউসি-র একাধিক সদস্য একই অভিযোগ তুলে প্রশাসনের কর্তাদের চিঠি দেন৷ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই গত ডিসেম্বরে তদন্ত শুরু করে জেলা প্রশাসন৷ মাসখানেক বাদে তদন্তভার হাতে নেয় সিআইডি৷ ১৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা হয় চন্দনা ও সোনালী মণ্ডলকে৷ তারপর একে একে ধরা পড়েন মানস, জুহি, সস্মিতা, মৃণাল ঘোষ ও দেবাশিস চন্দ। এ দিন আদালতে চন্দনা দাবি করেন, ‘‘সোনালীকে মিথ্যে করে অ্যাডপশন অফিসার বলা হচ্ছে৷’’ আসল অ্যাডপশন অফিসারকে কেন ধরা হচ্ছে না সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি৷ তবে সিআইডি কর্তারা তার কোনও উত্তর দেননি৷