রাজ্যে ক্রমশ বাড়ছে ভুয়ো ডাক্তারের তালিকা, সিট গঠন সিআইডির

সিআইডি সূত্রের খবর, কলকাতার অলটারনেটিভ মেডিক্যাল কাউন্সিল নামে একটি প্রতিষ্ঠানের অফিসে হানা দেন তদন্তকারীরা। রাজ্য জুডে়ই ভুয়ো ডাক্তারের আরও খোঁজ মিলছে। নিমতার অমিতাভ বসু স্মৃতি রক্ষা কমিটির চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে তিন চিকিৎসককে বরখাস্ত করেছেন কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৭ ০৩:৫৮
Share:

অজয় তিওয়ারি

ভুয়ো চিকিৎসকের জাল ক্রমশ লম্বা হতেই সিআইডির তরফে গঠন করা হল বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট। যার মাথায় থাকছেন সিআইডির ডিআইজি (অপারেশন)। বুধবার তদন্তকারীদের সঙ্গে বৈঠক করার পর ওই দল গঠন করেন সিআইডির কর্তারা। বর্তমানে একজন ডিএসপির নেতৃত্বে সিআইডির আর্থিক দমন শাখার অফিসাররা তদন্ত করছিলেন। আজকের বৈঠকের পর সিআইডির বাছাই করা গোয়েন্দাদের নিয়ে আরও দুটি দল গঠন করা হয়েছে।

Advertisement

সিআইডি সূত্রের খবর, কলকাতার অলটারনেটিভ মেডিক্যাল কাউন্সিল নামে একটি প্রতিষ্ঠানের অফিসে হানা দেন তদন্তকারীরা। রাজ্য জুডে়ই ভুয়ো ডাক্তারের আরও খোঁজ মিলছে। নিমতার অমিতাভ বসু স্মৃতি রক্ষা কমিটির চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে তিন চিকিৎসককে বরখাস্ত করেছেন কর্তৃপক্ষ। এঁদের মধ্যে একজন আবার নিজের নামের পাশে এমডি বলে লিখতেন। বাকি দু’জন রেজিস্ট্রেশন নম্বরই দেখাতে পারেননি। এই চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্ণধার পুলক পাল বলেন, ‘‘আমাদের এখানে এক্সরে ও ইউএসজি করতে পাঠান বহু চিকিৎসক। যাঁদের প্রেসক্রিপশন দেখলে বোঝা যায় না ওঁরা ঠিক কী পরীক্ষা করাতে পাঠিয়েছেন। অথচ তাঁরা প্রেসক্রিপশনে এমডি বা এমএস বলে লেখেন।’’

ঠিক যেমন সিআইডির হাতে ধৃত ভুয়ো ডিগ্রিধারী চিকিৎসক অজয় তিওয়ারি। প্রথমে বিমান চালকের প্রশিক্ষণ। তার পরে সাত বছর কলকাতার হোমিওপ্যাথি কলেজে পড়েছিলেন। ১৯৯৬ সালের ১৭ অগস্ট ভুয়ো ডিগ্রি দেখিয়ে আলিপুরের কোঠারি মেডিক্যাল সেন্টারে গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: ইউনানি ডিগ্রি নিয়ে জরুরি বিভাগের ডাক্তারি

সিআইডি সূত্রের খবর, অজিত ১৯৮৯ সালে গোবিন্দ খটিক রোডে ওকটি হোমিওপ্যাথি কলেজে ভর্তি হন। সেখানেও তিনি রেগুলার পরিক্ষার্থী হিসেবে পাশ করতে পারেননি। সাত বছর ধরে বিভিন্ন বিষয়ে কমপ্লিমেন্টারি পেয়ে পাশ করেন ১৯৯৬ সালে।

গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, আলিপুরের পাশাপাশি তালতলার একটি বেসরকারি হাসপাতালেও যুক্ত ছিলেন অজয়। যা প্রথমে চেপে গিয়েছিলেন ধৃত। পরে জেরার মুখে তা স্বীকার করে নেওয়ার পাশাপাশি জানান, খিদিরপুরের বাবুবাজার, পাহারপুর রোড, গার্ডেনরিচ, কলুটোলা এবং সিআইটি রোডের ফিলিপস মোড়ে তার চেম্বার ছিল। আইজলের এক চিকিত্সকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করতেন অজয় তিওয়ারি। পাশাপাশি অসম মেডিক্যাল কাউন্সিলের অধীনে তাঁর এমবিবিএস ডিগ্রি আছে বলে দাবি করেছিলেন অজয়।

সিআইডির দাবি, ভুয়ো চিকিৎসক হিসেবে প্রথমে গ্রেফতার হওয়া কাইজার আলম যাঁর মাধ্যমে ইএম বাইপাসের ধারের একটি হাসপাতালে চিকিৎসক হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে, সেই চিকিৎসকই পরবর্তী কালে তিলজলার ওই হাসপাতালের কর্তা হন। গোয়েন্দাদের অনুমান মধ্য কলকাতার ওই চিকিৎসকই সুযোগ করে দিয়েছিল অজয়কেও। সিআইডির দাবি, তাঁরা ওই চিকিৎসককে ডেকে পাঠালেও তিনি হাজির হননি।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এ দিনই ভবানীভবনে অজয় তিওয়ারির ভুল চিকিৎসায় মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন এক যুবক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন