পিংলা বিস্ফোরণ কাণ্ডে এ বার ধৃত তৃণমূল কর্মী রঞ্জন মাইতির ভাই নিমাই মাইতির খোঁজ শুরু করল সিআইডি। সিআইডি’র এক সূত্রে খবর, রঞ্জনকে জেরা করে জানা গিয়েছে, বেআইনি বাজির কারবারে নিমাইও যুক্ত। তাঁর পিক-আপ ভ্যানেই বিভিন্ন এলাকায় বাজি সরবরাহ করা হত। এই পরিস্থিতিতে নিমাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি বলেই মনে করছেন সিআইডি কর্তারা। প্রয়োজনে তাঁকে গ্রেফতারও করা হতে পারে।
ঘটনার পর থেকেই পলাতক নিমাই। স্থানীয় সূত্রের খবর, রঞ্জনের এই ভাইও তৃণমূল করতেন। তাঁর স্ত্রী সুলেখা মাইতি তৃণমূলের স্থানীয় নেত্রী। তবে শাসক দলের নেতারা এ সব মানতে নারাজ। তৃণমূলের অন্যতম জেলা কার্যকরী সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, “রঞ্জনদের সঙ্গে দলের কোনও যোগাযোগ নেই। কখনও ছিলও না।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, পিংলার মুণ্ডুমারিতে রঞ্জনদের একটি ভিডিও হল এক সময় রমরমিয়ে চলত। এখন সেটি বন্ধ। পরিত্যক্ত বাড়িটা পড়ে রয়েছে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, সিআইডি-র উচিত ওই হলে তল্লাশি চালানো। কারণ, সেখানে বারুদ-সহ অন্য বিস্ফোরক মজুত থাকতে পারে। পিংলার বিজেপি নেতা গৌর ঘোড়ইয়েরও বক্তব্য, “রঞ্জনরা বোমা-বাজির কারবার করত। কে বলতে পারে এই হলে কিছু মজুত নেই। এখানে তল্লাশি চালানো উচিত।”
ইতিমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়ের বিস্ফোরণস্থলে এসে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডি। সে সব পরীক্ষার জন্য ‘সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি’- তে (এসএফএসএল) পাঠানো হবে। সোমবার এ জন্য মেদিনীপুর আদালতের অনুমতি নেওয়া হয়। আজ, মঙ্গলবার সংগৃহীত নমুনা এসএফএসএলে পাঠানো হতে পারে। এ দিন মেদিনীপুর আদালতে এসেছিলেন মামলার তদন্তকারী অফিসার (আইও) নীরেন ভট্টাচার্য। তবে তিনি কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দিতে চাননি।
গত ৬ মে রাতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয় পিংলার ব্রাহ্মণবাড়ের বেআইনি বাজি কারখানায়। ৮ নাবালক-সহ মৃত্যু হয় ১২ জনের। ঘটনার পরই গ্রেফতার করা হয় গ্রামে তৃণমূল কর্মী হিসেবে রঞ্জন মাইতি। রঞ্জনের মদতেই বেআইনি বাজির আড়ালে কারখানায় বোমা তৈরি হত বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, রাজ্যে পালাবদলের আগে রঞ্জন সিপিএম করতেন। কিছু দিন সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। পালাবদলের পরে তিনি তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি গৌতম জানার ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন।
গত শনিবারই ধৃত রঞ্জনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে সিআইডি। সিআইডি-র এক সূত্রে খবর, বাড়িতে কয়েকটি আলমারি রয়েছে। তবে সে দিন তালা খোলা হয়নি। রঞ্জন আগামী ২২ মে পর্যন্ত সিআইডি হেফাজতে থাকবেন। এই সময়ের মধ্যে ধৃতকে নিয়ে এসে ফের তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হতে পারে।