মোর্চা সমর্থকদের বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি।
হাইকোর্টের নির্দেশকে হাতিয়ার করে এ বার পাহাড়ে হিংসার নানা মামলা সমতলের আদালতে সরিয়ে আনতে চাইছে সিআইডি। অশান্তি এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে সিআইডি সূত্রে খবর। গত ৭ জুলাই কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী জানান, সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনায় দার্জিলিং, কার্শিয়াং ও মিরিকে রুজু হওয়া মামলায় যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁদের গ্রেফতার করে শিলিগুড়ির অতিরিক্ত জেলা জজের আদালতে হাজির করা যাবে। এই নির্দেশকে হাতিয়ার করেই সিআইডি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পাহাড়ে জুনের শেষে মন্ত্রিসভার বৈঠকের দিন থেকে শুরু করে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ-হিংসা চলছে। তার মধ্যে ভানু ভবনের সামনে গণ্ডগোল, সিংমারিতে হিংসা, দার্জিলিঙে পুলিশ আধিকারিকের অফিসে হামলা, আরও দু’জায়গায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই যুবকের মৃত্যু— এই পাঁচটি ঘটনার তদন্ত করছে সিআইডি। চারটি মামলা রুজু হয়েছে দার্জিলিং সদর থানায়, একটি জোড়বাংলো থানায়। সবকটিতেই অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে মোর্চার প্রথম সারির নেতা-নেত্রীদের।
আরও পড়ুন: শালবনির জমি ফেরাতে চায় জিন্দল
অভিযুক্ত নেতাদের গ্রেফতার করা হবেই, এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে গ্রেফতার করার পর ধৃতদের দার্জিলিঙের চকবাজারে জেলা আদালতে হাজির করানো যাবে না বলেও গোয়েন্দারা ধরে নিয়েছেন। আশঙ্কা, গ্রেফতার করা হলেও ধৃতদের আদালতে নিয়ে পৌঁছনোই মুশকিল হবে। যাওয়ার পথে ধৃতদের ছিনতাই করা হতে পারে। তার জেরে সংঘর্ষ, রক্তক্ষয়ও হতে পারে। তা এড়াতেই তদন্তকারীরা প্রাথমিক ভাবে ঠিক করেছেন, গ্রেফতারের পর ধৃতদের শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে অতিরিক্ত জেলা জজের এজলাসে পেশ করা হবে।
তবে এখন পাহাড়ের যা পরিস্থিতি, তাতে মোর্চা নেতৃত্বের কাউকে কী ভাবে গ্রেফতার করা সম্ভব? সিআইডি-র এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘পাহাড়ে গিয়ে গ্রেফতার করার প্রশ্ন নেই। তবে মোর্চা নেতা-নেত্রীদের কয়েক জন দিল্লি যাচ্ছেন বাগডোগরা বিমানবন্দর হয়ে। ওখানে মোর্চার আধিপত্য নেই। ওখানে গ্রেফতার করে শিলিগুড়ি আদালতে হাজির করানো যেতে পারে।’’ কিন্তু তাঁদের গ্রেফতারি নিয়েও তো পাহাড়ে আগুন জ্বলতে পারে? এক তদন্তকারী অফিসারের বক্তব্য, ‘‘এখনও রোজ গণ্ডগোল চলছে, আগুন জ্বলছে। কয়েকজন নেতা গ্রেফতার হলে মোর্চাকে বার্তা দেওয়া যাবে যে, প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ করেছে।’’