জেলা সফরে পুরুলিয়ায় গিয়ে সার্কিট হাউসে বিপজ্জনক বিদ্যুৎ সংযোগ চোখে পড়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে এ বার সাসপেন্ড হলেন তিন সরকারি ইঞ্জিনিয়ার।
মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের সময়ে এ ধরনের বিভ্রাট নতুন নয়। বছর দু’য়েক আগে মাদারিহাটে সরকারি অতিথি নিবাসে তাঁর রাত্রিবাসের সময় কয়েকদফায় লোডশেডিং হয়। কিন্তু জেনারেটর ঠিকঠাক চলেনি। তার পরেই রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক ডিভিশনাল ম্যানেজারকে সাসপেন্ড করা হয়। ওই ঘটনার মাস দু’য়েক আগে লোকসভা ভোটের প্রচারে মমতা মালদহের নারায়ণপুরের একটি হোটেলে উঠেছিলেন। সে বার তাঁর শোওয়ার ঘরের শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। ঘর থেকে বেরিয়ে এলেও তিনি ধোঁয়ায় অসুস্থ হন। সে বার হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল পুলিশ।
প্রশাসন সূত্রের খবর, গত ২ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রী পুরুলিয়ায় পুরনো সার্কিট হাউসে ওঠেন। ৩ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রীর নজরে পড়ে শৌচাগারের টিউবলাইটের অবস্থা। সার্কিট হাউসের এক কর্মী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজেই স্যুইচ বন্ধ করে ঘটনাটি আমাদের জানান।’’ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাটি পূর্ত (বিদ্যুৎ) দফতরের আধিকারিকদের নজরে আনা হয়। পুরনো সার্কিট হাউসের বিভিন্ন ঘর ও শৌচাগারের ছাদ থেকেও জল চুঁইয়ে পড়ার কথা মমতার কানে আসে। তিনি সমস্ত বিষয়টি জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তীকে দেখতে বলেন।
বিপদ না হলেও ঘটনাটি হাল্কা ভাবে নেননি প্রশাসনের কর্তারা। পূর্ত (বিদ্যুৎ) দফতরের কর্তারা ও জেলা এসপি রূপেশ কুমার সে দিনই ওই শৌচাগার পরিদর্শন করেন। গলদ খুঁজতে টিউবলাইটটি পাঠানো হয়েছে বিশেষজ্ঞদের কাছে। পরীক্ষা করা হয়েছে শৌচাগারের বিদ্যুৎ সংযোগ।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ঘর লাগোয়া শৌচাগারের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা দেখভালে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। পূর্ত দফতর তিন ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করেছে।’’ সাসপেন্ড হওয়া এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শমিত সেন বলেন, ‘‘এ নিয়ে কিছু বলব না।’’ বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি সাসপেন্ড হওয়া অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার কুণাল বিশ্বাস ও জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সজল দাসের সঙ্গে। ইতিমধ্যেই এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের দায়িত্বে এসেছেন অদ্বৈত মাজি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সার্কিট হাউসের ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে। এর বেশি বলা যাবে না।’’