কমিটি নিয়ে টানাপড়েনে গরহাজির জেলা নেতারা

নিচুতলার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে সংগঠনের জেলা কমিটি গঠনের অভিযোগে মাসখানেক আগেই রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল পূর্ব বর্ধমান জেলা এসএফআই। তারই জেরে শনিবার থেকে বার্নপুরে শুরু হওয়া সংগঠনের রাজ্য সম্মেলনে যোগ দিলেন না পূর্ব বর্ধমানের বেশির ভাগ প্রতিনিধি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২৪
Share:

শনিবার বার্নপুরে শুরু হল এসএফআইয়ের রাজ্য সম্মেলন। নিজস্ব চিত্র

পুরসভার ভোটের দিন লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানো বা কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা— পরস্পরের নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে বারবারই দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে সিপিএমের বর্ধমান জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বে। দলের ছাত্র সংগঠনেও এ বার দেখা গেল এক ছবি।

Advertisement

নিচুতলার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে সংগঠনের জেলা কমিটি গঠনের অভিযোগে মাসখানেক আগেই রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল পূর্ব বর্ধমান জেলা এসএফআই। তারই জেরে শনিবার থেকে বার্নপুরে শুরু হওয়া সংগঠনের রাজ্য সম্মেলনে যোগ দিলেন না পূর্ব বর্ধমানের বেশির ভাগ প্রতিনিধি। শুধু তাই নয়, বর্ধমান শহরের দুই ছাত্রনেতা বৃহস্পতিবার পার্কাস রোডে সিপিএমের জেলা কার্যালয়ে গিয়ে ইস্তফা প্রকাশ করে চিঠিও দিয়েছেন।

এক এসএফআই জেলা নেতার বক্তব্য, ‘‘জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর ওই দুই সদস্য তন্ময় রায়চৌধুরী ও স্বাধীন দত্ত সংগঠনের নিচুতলা পর্যন্ত কাজ করতে রাজি। কিন্তু প্রাক্তন এক নেতার দাদাগিরি মানতে নারাজ। কোনও কিছু চাপিয়ে দেওয়ারও বিরুদ্ধে। সে জন্য জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে থেকে প্রতিবাদও করেছেন এক মাস ধরে। তাতে কাজ না হওয়ায় ইস্তফার চিঠি দিয়েছেন।’’

Advertisement

গত ১১ ও ১২ নভেম্বর বুদবুদে এসএফআইয়ের পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্মেলনে ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী মধুজা সেনরায়, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সৌগত পাণ্ডা। ৫৫ জনের জেলা কমিটির প্যানেলে নতুন জেলা সম্পাদক হন অনির্বাণ রায়চৌধুরী ও সভাপতি বিশ্বরূপ হাজরা। এই প্যানেল প্রকাশের পরেই বিরোধিতা শুরু হয়। পাল্টা প্যানেল জমা পড়ে, যেখানে ওই দুই পদের জন্য চন্দন সোম ও সৌমেন কার্ফার নাম রাখা হয়। ভোটাভুটিতে এই পাল্টা প্যানেল ৪০-১১ ভোটে জিতলেও প্রথম প্যানেলই বহাল রাখা হয়।

পাল্টা প্যানেলের সমর্থকদের দাবি, এক মাস কেটে গেলেও নতুন নেতৃত্ব কাটোয়ার মতো দু’একটি জায়গা ছাড়া অন্য কোথাও গিয়ে বৈঠক করতে পারেননি। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকেও নতুন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। এরই মধ্যে দু’জন গুরুত্বপূর্ণ জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ইস্তফার চিঠি দেওয়ায় অচলাবস্থা তৈরি হল।’’

এসএফআই সূত্রে জানা যায়, ওই দু’জনই চন্দন সোম ও সৌমেন কার্ফার অনুগামী বলে পরিচিত। তাঁরা কেউই গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে জেলা এসএফআইয়ের এক নেতা বলেন, ‘‘পারিবারিক কারণে ওঁরা যেতে পারবেন না বলে চিঠি দিয়েছেন। তাঁদের বদলে আরও দু’জনের নাম ঠিক করা হয়েছিল। তাঁরাও যেতে গররাজি হয়েছেন।’’ সংগঠনের রাজ্য কমিটির বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক দেবজ্যোতি দাস গোটা বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘‘আমি এখনও সংগঠনের তরফে কোনও খবর পাইনি। তবে কিছু হলে সংগঠনে আলোচনা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন