—প্রতীকী ছবি।
রাস্তা আটকে লরি দাঁড় করিয়ে ইট নামানো হচ্ছিল। গাড়ি সরাতে বলে দুই যুবক। তাতেই বচসার সূত্রপাত। বচসা গড়িয়ে যায় দুই দলের মধ্যে হাতাহাতিতে। এমনকী ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতও করা হয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার এমনই অভিযোগ জমা পড়ল বিধাননগরের ইলেক্ট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায়। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে মহিষবাথানে।
কিন্তু সেই অভিযোগের সারবত্তা খুঁজতে গিয়ে সেই সিন্ডিকেটের লড়াইয়ের কথাই সামনে এসেছে। যার দু’দিকেই রয়েছেন শাসক দলের কর্মীরা।
ঠিক কী ঘটেছিল বুধবার রাতে?
স্থানীয় সূত্রের দাবি, মহিষবাথানে রাস্তার কাজ শুরু করেছে বিধাননগর পুরসভা। সেই কাজের জন্য একটি ইট বোঝাই লরি রাতে মহিষবাথানে ঢোকে। যার তদারকি করছিল রবীনের দলবল। রবীন স্থানীয় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী বলে পরিচিত। কিছু পরে দুটি মোটরবাইকে চন্দন শিকারি সহ কয়েকজন যুবক সেখানে এসে লরি সরাতে বলে। চন্দন আবার বাম শিবির ছেড়ে যোগ দেওয়া তৃণমূল নেতা ক্ষীতিশ মণ্ডলের অনুগামী বলে পরিচিত। লরি সরানোর প্রসঙ্গ থেকেই দু’পক্ষের বচসার সূত্রপাত। তা পরে হাতাহাতিতে গড়ায়। লরিতে ভাঙচুর চালানো হয় বলেও জানান স্থানীয়েরা। যা রুখতে গেলে স্থানীয়দের অনেকেই প্রহৃত হয়েছেন বলে অভিযোগ। লরির কাচ ফুটে গিয়ে দু’টি ছেলের রক্তপাতও ঘটেছে। যদি বাসিন্দাদের তরফ থেকে এমন কোনও অভিযোগ লিখিতভাবে কোনও স্তরে জমা পড়েনি। ঘটনায় আহত চন্দন শিকারি বৃহস্পতিবার সকালে ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দেয়।
অভিযোগে চন্দন জানিয়েছে, রাস্তা আটকে লরি দাঁড় করানো হয়েছিল। তারা এগোনো যাচ্ছিল না। তাই লরি সরাতে বলা হয়েছিল। তাতেই রেগে গিয়ে আচমকা তাদের উপর হামলা চালায় রবীনের দলবল। অভিযোগ অবশ্য সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছে রবীন। এমনকী তার দাবি, ওই সময় তিনি ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। তার পাল্টা অভিযোগ, তাকে ফাঁসানোর জন্যই চক্রান্ত করেছে চন্দন। কিন্তু কেন চন্দন তাকে ফাঁসাতে চাইছে? তবে কি ঝামেলার পিছনে রয়েছে সিন্ডিকেটের দখলদারির চেষ্টা?
সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব মানতে নারাজ কাউন্সিলর বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘সিন্ডিকেট নিয়ে গোলমাল হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমার ওয়ার্ডে কোনও সিন্ডিকেট নেই। ওই সংক্রান্ত কোনও সমস্যাও নেই।’’ তবে তিনি জানান, ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় যাদের নাম উঠছে, তাদের সকলকেই তিনি চেনেন। এমন ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। আইন আইনের পথে চলবে। এ দিন অভিযুক্ত রবীনের দেখা মেলেনি। তাঁর মোবাইল ফোনও সুইচড অফ ছিল। তৃণমূল নেতা ক্ষীতিশ মণ্ডলও সিন্ডিকেটের অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘স্থানীয় যুবকদের মধ্যে সামান্য গোলমাল হয়েছিল মাত্র।’’ বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘এটা পুর পরিষেবার বিষয় নয়। কোনও মন্তব্য করব না।’’ কিন্তু ওই রাস্তা পুরসভাই তৈরি করছিল। মেয়র বলেন, ‘‘রাস্তা তৈরির যিনি বরাত পেয়েছেন, তিনি অভিযোগ করলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’ বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসুর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।