ফাইল চিত্র।
মাত্র আট কিলোমিটার দূরে পিঠোপিঠি দু’টো কর্মসূচি। তা ঘিরেই শনিবার দুপুরে বেলপাহাড়িতে প্রকাশ্যে এল আদিবাসীদের দুই শিবিরের বিভাজন। পরস্পরকে দুষতেও ছাড়ল না দু’পক্ষ।
শুক্রবারই ঝাড়গ্রামে আদিবাসীদের নিয়ে সভা করেছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদিবাসী যুব সংগঠন ‘জুয়ান গাঁওতা’র নেতা প্রবীর মুর্মু বেলপাহাড়ি স্কুল মাঠে সামাজিক সম্মেলন করলেন। প্রবীর জানান, সাঁওতাল সমাজের সামাজিক সংগঠনকে ঢেলে সাজতে ‘ভারত জাকাত মাঝি মাডওয়া’-র পুনর্গঠনে তাঁদের এই সম্মেলন।
অন্য দিকে, শিলদা কমিউনিটি হল চত্বরে সামাজিক সচেতনতা সভা ও রক্তদান শিবির করে ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’। সেখানে সংগঠনের সর্বভারতীয় সুপ্রিমো (দিশম পারগানা) নিত্যানন্দ হেমব্রম ছাড়াও পঞ্চায়েত ভোটে বেশ কিছু আসনে জয়ী আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের নেতারাও হাজির ছিলেন।
প্রবীরের অভিযোগ, “নির্দল প্রার্থীদের ভোট না দেওয়ায় পারগানা মহল সামাজিক বয়কট করছে, হুমকি দিচ্ছে, জরিমানার নামে তোলাবাজি চলছে। এ সবে দাঁড়ি টেনে সাবেক ভারত জাকাত মাঝি মাডওয়াকে আমরা প্রশাসনের সহযোগিতায় সংগঠিত করছি।” ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর নেতা নিত্যানন্দের পাল্টা অভিযোগ, “আমাদের সামাজিক সংগঠন ভাঙতে রাজনৈতিক চক্রান্ত হচ্ছে। প্রশাসনের প্ররোচনায় কিছু একঘরে লোক এই সব করছেন।’’ পারগানা মহলের লোকজন বিকেলে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সশস্ত্র বাইক মিছিলও করেন। শেষমেশ ভীমচকে আটকানো হয় মিছিল।
তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য আদিবাসী সমাজে বিভাজনের চেষ্টার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। সাংগঠনিক ভাবে ঝাড়গ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত পার্থবাবু বলেন, ‘‘এই সব আলাদা সংগঠনের কথা আমার জানা নেই। ওদের মধ্যে কোনও বিভাজন হয়েছে বলেও শুনিনি। কারও অভিযোগ থাকলে সরাসরি আমাকে জানাতে পারে।’’
নিত্যানন্দ হেমব্রমের নেতৃত্বাধীন সাবেক ‘ভারত জাকাত মাঝি মাডওয়া’ সংগঠন এখন আর নেই। ২০১৩ সালে পাঁচ রাজ্যের আদিবাসী সমাজের নেতারা ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’ গড়েছিলেন। নতুন সংগঠনেরও প্রধান হন নিত্যানন্দবাবু। আদিবাসীদের নানা দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছেন তাঁরা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নবান্নে বৈঠকও করেছিলেন। নিত্যানন্দবাবুর আশা, ‘‘যাঁরা এখন আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, শেষ পর্যন্ত তাঁরাও সংগঠনের মূলস্রোতে ফিরে আসবেন।”