school

গ্রামে কেউ মারা গেলে খবর দেওয়া হয় স্কুলে, বাড়ি চলে যায় পড়ুয়ারা, পঠনপাঠন বন্ধ!

স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, দাহের সময় স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ছুটি হয়ে যায় স্কুল। দীর্ঘ দিন ধরে এই একই ব্যবস্থা চলে আসছে এই বিদ্যালয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:১৬
Share:

গ্রামের শ্মশান অন্য জায়গায় সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। না হলে বৈদ্যুতিক চুল্লির ব্যবস্থা করা হোক। —নিজস্ব চিত্র।

গ্রামে কেউ মারা গেলে বন্ধ হয়ে যায় স্কুল। এটাই এখন অলিখিত নিয়ম গোঘাটের পাতুলসাঁড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কারণ, স্কুলের পাশেই রয়েছে শ্মশান। সেখানে কাঠের চিতায় দেহ যখন দাহ করা হয়, তখন গন্ধে আর ধোঁয়ায় ক্লাস করা দায় হয়ে ওঠে। স্কুল কর্তৃপক্ষ, স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। মহকুমাশাসক জানিয়েছেন, এ নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।

Advertisement

স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, দাহের সময় স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ছুটি হয়ে যায় স্কুল। দীর্ঘ দিন ধরে এই একই ব্যবস্থা চলে আসছে এই বিদ্যালয়ে। গ্রামের বাসিন্দা দীপালি পাল বলেন, ‘‘গ্রামের কেউ মারা গেলে স্কুলে খবর দেওয়া হয়। স্কুল ছুটি হলে শেষকৃত্যের কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ দিন ধরে এই অবস্থা চললেও কোনও সমাধান হয়নি।’’

অন্য এক বাসিন্দার দাবি, গ্রামের শ্মশান অন্য জায়গায় সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। না হলে বৈদ্যুতিক চুল্লির ব্যবস্থা করা হোক। তা হলে দৃশ্য ও বায়ু দূষণ কমবে। গ্রামবাসীদের এই সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানও। স্থানীয় কুমোরশা পঞ্চায়েতের প্রধান উত্তম মুদি বলেন, ‘‘এখনকার সমাজে এটা শোভনীয় নয়। ওই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যকে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলতে বলেছি। আগে ওই শ্মশানে তিনটি পরিবার দাহ করত। বর্তমানে ৫০টি পরিবার দাহ করে। আগামী দিনে হয়তো আরও বাড়বে। তাই শ্মশান সরানোর জন্য লিখিত আবেদন করব প্রশাসনের কর্তাদের কাছে।’’

Advertisement

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাহেব মণ্ডল বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরেই এই ব্যবস্থা চলে আসছে। দাহ কাজ করলে আমরা স্কুল ছুটি দিয়ে দিই। ভিইসি কমিটিকে একাধিক বার বলেছি কিছু ব্যবস্থা করতে। কোনও ব্যবস্থাই হয়নি। শ্মশানটি কয়েকশো বছরের পুরনো। তাই তার সঙ্গে ভাবাবেগ জড়িয়ে রয়েছে।’’

আরামবাগের মহকুমাশাসক সুভাষিণী ই বলেন, ‘‘গোঘাটের ওই স্কুল সরেজমিন করে রিপোর্ট দিতে বলেছি ব্লককে। শ্মশান সরিয়ে নেওয়া যায়, না কি অন্য কিছু করা যায়, তা দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন