পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে ফের আলোচনার ডাক মুখ্যমন্ত্রীর

এক চিলতে আশার আলো দেখা গিয়েছে সোমবার বিমল গুরুঙ্গের বার্তায়। ওই দিন তিনি পাতলেবাসে সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্র অনুরোধ করলে বন্‌ধ তুলে নেওয়া হবে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মমতার এই ডাক যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, সেটা অনেকেই বলতে শুরু করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ০৪:০২
Share:

ফাইল চিত্র।

বারবার তিন বার। হিংসা ছেড়ে বন্‌ধ তুলে নিলে পাহাড়ের দলগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসতে তাঁর যে কোনও আপত্তি নেই, বুধবার সেটা ফের জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বারে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে।

Advertisement

এর আগে আরও দু’বার পাহাড়ের দলগুলিকে বৈঠকে বসার ডাক দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা-সহ পাহাড়ে আন্দোলনকারী দলগুলি তাতে এখনও সাড়া দেয়নি। যদিও এক চিলতে আশার আলো দেখা গিয়েছে সোমবার বিমল গুরুঙ্গের বার্তায়। ওই দিন তিনি পাতলেবাসে সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্র অনুরোধ করলে বন্‌ধ তুলে নেওয়া হবে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মমতার এই ডাক যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, সেটা অনেকেই বলতে শুরু করেছেন।

টানা ৫৭ দিন বন্‌ধ চলছে পাহাড়ে। এখনও অচলাবস্থা কাটার কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে সরকারের একাংশের মত। কিন্তু সেখানে পরপর দু’দিন ধরে গুরুঙ্গ ও মমতার কথা শোনার পরে প্রশাসনের অন্দরে প্রশ্ন, তা হলে কি দু’পক্ষই এ ভাবে বৈঠকে বসার প্রস্তুতি শুরু করেছে?

Advertisement

পাঁচকাহন

• ১৭ জুন, ২০১৭ পাহাড়ে বন্‌ধ তুলে শান্তির পথে ফিরলে আলোচনায় বসবে রাজ্য, নবান্নে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

• ১ অগস্ট পাহাড় সমস্যা মেটাতে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়াতে সরকারি সভা থেকে সব দলকে আলোচনায় ডাক মুখ্যমন্ত্রীর।

• ৩ অগস্ট বন্‌ধ তুলে পাহাড়ের দলগুলিকে আলোচনায় বসতে বললেন দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া।

• ৭ অগস্ট কেন্দ্র গোর্খাল্যান্ড নিয়ে আলোচনায় ডাকলে বন্‌ধ প্রত্যাহার করা হবে, জানালেন বিমল গুরুঙ্গ।

• ৮ অগস্ট পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে বিধানসভা থেকে সকলকে আলোচনায় বসার ডাক মুখ্যমন্ত্রীর।

আন্দোলনের শুরুর দিকে মোর্চা চাইছিল রাজ্যকে এড়িয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করতে। কিন্তু সেটা যে সম্ভব নয়, তা কেন্দ্র তাদের ভাল ভাবেই বুঝিয়ে দিয়েছে। এমনকী, ত্রিপাক্ষিক আলোচনাও আদৌ হবে, নাকি পাহাড়ের দলগুলিকে শেষে রাজ্যের সঙ্গেই বসতে হবে, তা-ও এখন প্রশ্নের মুখে। মমতা সম্প্রতি দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রকে দার্জিলিঙের কথা জানিয়ে এসেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ডাকা বৈঠকে গিয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থও। মোর্চা আর নবান্নের মাঝে কোনও ভাবেই যে তারা নাক গলাতে চায় না, তখনই স্পষ্ট করে দিয়েছে কেন্দ্র। এমনকী, রাজ্যের অনুরোধ মেনে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার মেয়াদও বাড়িয়েছে দিল্লি। দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার মাধ্যমে মোর্চাকে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসার বার্তাও দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:পাহাড়ে উস্কানি দিচ্ছে সিপিএম: মুখ্যমন্ত্রী

সূত্রের খবর, পাহাড়ের নেতারা বন্‌ধ তোলার জন্য সম্মানজনক রফার সন্ধান করছেন। কারণ, বারবার চেষ্টা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে দেখা করেননি। আবার মমতার আলোচনার ডাকের পাশাপাশি মোর্চার নেতাদের ধরপাকড়ও চলছে সমানে। মদন তামাঙ্গ খুনের মামলাতেও বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত এগোচ্ছে। শীর্ষ মোর্চা নেতা-নেত্রীরা এই মামলায় অভিযুক্ত। ফলে তা তাঁদের কাছে চাপের কারণ।

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন দাবি করেন, টানা বন‌্ধ এবং হিংসার জেরে পাহাড়ে মোট ক্ষতির পরিমাণ ৫৫০ কোটি টাকা। ৫৪টি গাড়ি, ৭৩টি সরকারি সম্পত্তি নষ্ট এবং ১১৩ জন পুলিশ ও সরকারি কর্মী এই ঘটনায় আহত হয়েছেন। তার পরেও সরকার শুধু শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই আলোচনায় বসতে চাইছে। তাঁর কথায়, ‘‘একমাত্র আলোচনাতেই সুষ্ঠু মীমাংসা হতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন