কৃষিজমি কমেছে সিঙ্গুরে, বহু চাষি অন্য কাজ করছেন, মানলেন মমতা

সিঙ্গুরের কারখানা ভেঙে জমি ফেরানোর সময় ৪১ একর জমির কোনও দাবিদার ছিল না বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ০২:০৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

সিঙ্গুরে চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমছে বলে বিধানসভায় জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুর উন্নত হওয়ায় অনেক চাষি কৃষিজমি বিক্রি করে ‘ভাল দাম’ পাচ্ছেন এবং সেই টাকায় অন্য কোনও কাজ করছেন বলেও স্বীকার করেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

বাম আমলে সিঙ্গুরে কৃষিজমি রক্ষার স্বার্থে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতার আন্দোলনের জন্যই টাটার গাড়ি কারখানা হতে পারেনি। পরে সরকারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা অধিগৃহীত জমি চাষিদের ফেরত দেন। তবে তা আর চাষযোগ্য নেই বলে কৃষকদের অভিমত। বুধবার মমতা বিধানসভায় যা বললেন, তাতে চাষের জমি বিক্রি করে সেই টাকা অন্য ভাবে কাজে লাগানোর ‘ইতিবাচক’ দিক স্পষ্ট হয় বলে পর্যবেক্ষকদের অভিমত।

সিঙ্গুরে গাড়ি কারখানার জন্য অধিগৃহীত জমিতে ২০১৭-১৮ সালে কোন কোন ফসল উৎপাদিত হয়েছে এবং তার মূল্য কত— বিধানসভায় বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর এই প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘১৯২০বিঘা জমিতে ধান, গম, আলু, ভুট্টা, কলা চাষ হয়েছে।’’ ১৯২০ বিঘা অর্থাৎ ৬৪০ একর জমি। যদিও তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সিঙ্গুরের অধিগৃহীত ৯৯৭.১১ একর জমির মধ্যে ৯৫৫.৯০ একর জমি চাষিদের ফেরত দেওয়া হয়েছিল। সুজনবাবু জানতে চান, জমির পরিমাণ কমে ৬৪০ একর হওয়া মানে কি বাকি জমি পতিত?

Advertisement

তখনই মুখ্যমন্ত্রী উঠে বলেন, ‘‘২০১৮-১৯ সালে সিঙ্গুরে ৭৯২ জন চাষি ২৬০ একর জমিতে চাষ করছেন। জমির পরিমাণ ক্রমশ কমছে। চাষিরা চাষ করতে না চাইলে কী করতে পারি!’’ তাঁর আরও ব্যাখ্যা, ‘‘বীজ, সার, চাষের জিনিসপত্র, নানা সুবিধা দেওয়া সত্ত্বেও কেউ কেউ চাষ করছেন না। চাষিরা তাঁদের জমিতে কী করবেন, তা তাঁদের নিজস্ব ব্যাপার। আমি তো কারও জমিতে হস্তক্ষেপ করতে পারি না।’’

মমতাই জানান, ২৬০ একর জমিতে ৭৯২ জন চাষির উৎপন্ন ফসলের বার্ষিক মূল্য ২ কোটি টাকা। এই তথ্য জেনে সুজনবাবু বলেন, ‘‘তা হলে তো চাষিপিছু বছরে লাভ ২৫ হাজার টাকার কাছাকাছি। কৃষকের আয় তিনগুণ বাড়ার যে দাবি আপনারা করেন, তা তো টিকছে না।’’

সিঙ্গুরের ওই কারখানা ভেঙে জমি ফেরানোর সময় ৪১ একর জমির কোনও দাবিদার ছিল না বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। মমতার আন্দোলনের সময় একই কথা বলেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ওই জমির মালিকদের খুঁজে বার করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে মমতা জানান।

বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘প্রায় ৩০ বছর ধরে সিঙ্গুরের জমির মিউটেশন হচ্ছে না। ফলে অনেক আগে মালিক ছিলেন, এমন অনেকে জমি বাবদ ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। প্রকৃত মালিকদের খুঁজে বার করুক সরকার।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন