ফের ধমক মুখ্যমন্ত্রীর

অনেক দিয়েছি, নিজেরা আয়ের ব্যবস্থা করুন এ বার: মমতা

মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘অনেক টাকা আপনাদের দিয়েছি। টাকা ইনকাম করার ব্যবস্থা করুন। প্রতি বছরই যদি পাওয়ারের জন্য ১০০ কোটি টাকা দিতে হয় সরকার পারবে না।  পাওয়ার ডিপার্টমেন্টকে কেন বার বার সাবসিডি (ভর্তুকি) দিতে হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩৭
Share:

দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন শিশির অধিকারী এবং শুভেন্দ্ু অধিকারী। বৃহস্পতিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

‘আর কত চান আপনারা? নিজেরা একটু কাজকর্ম করুন। এলাকায় নিজেদের একটু নজর দিতে হবে। যানজট দূর করতে কি আমাকে আসতে হবে? কিছু বলার আগে দশবার ভেবে বলুন’। প্রশাসনিক বৈঠকে এভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেলেন পুরপ্রধান থেকে সরকারি পদস্থ কর্তা।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুর সফরে এসে বৃহস্পতিবার দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার পুরপ্রধানদের কাছে জানতে চান কী অসুবিধা আছে বলুন। সেই সময় এগরার পুরপ্রধান শঙ্কর বেরা বলেন, ‘‘আমরা এক বছর আগে বেশ কিছু কাজ করেছিলাম। কিন্তু এখনও টাকা পাইনি। এ নিয়ে পুরদফতরকে একাধিকবার জানিয়েছি। তবু টাকা মেলেনি।’’ মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘আপনি ইউসি (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) জমা দিয়েছেন?’’ শঙ্কর উত্তর দেন, ‘‘টাকাই পাইনি। ইউ সি দেব কী করে।’’ মুখ্যমন্ত্রী তখন জানতে চান,’’ টাকা না পেলে কাজ হল কী করে?’’ শঙ্কর বলেন, ‘‘আমাদের কাজ করতে বলেছিল। তাই টেন্ডার করে কাজ হয়ে গিয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘টাকা পাওয়ার আগে টেন্ডার করে কাজ হয়ে গিয়েছে? তা হলে ইউসি জমা দাও। টাকা পেয়ে যাবে।’’ এরপর ফের শঙ্কর মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘‘দিদি, এগরার এখন সবেচেয়ে বড় সমস্যা যানজট। এদিকে একটু নজর দিলে ভাল হয়।’’ এটা শুনে মুখ্যমন্ত্রী ধমকের সুরে বলেন, ‘‘আর কত চান আপনারা? এগরায় বাসস্ট্যান্ড করে দিচ্ছি। নিজেরা একটু কাজ করুন। নিজেদেরও এলাকায় একটু নজর দিতে হবে। লোকজনকে নিয়ে এই সব সমস্যা মেটাতে হবে। যানজট দূর করতেও কি আমাকে আসতে হবে? কিছু বলার আগে দশবার ভেবে তারপর বলুন।’’

এদিন বৈঠকে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দফতরের আধিকারিকদের কাছে জানতে চান। রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক তাঁকে বলেন, ‘‘তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬ টি ইউনিটের মধ্যে এখন তিনটি ইউনিট চালু রয়েছে। দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর সময় সেখানে ভাল করে ইউনিট চালাতে পেরেছি। কিন্তু ইদানীং কিছু সমস্যা হয়েছে। ফ্লু গ্যাস সারপ্রাইজেশন নিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রের নির্দেশ এসেছে। সেটা করতে হলে খরচ বাড়বে।’’

Advertisement

এটা শুনে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘অনেক টাকা আপনাদের দিয়েছি। টাকা ইনকাম করার ব্যবস্থা করুন। প্রতি বছরই যদি পাওয়ারের জন্য ১০০ কোটি টাকা দিতে হয় সরকার পারবে না। পাওয়ার ডিপার্টমেন্টকে কেন বার বার সাবসিডি (ভর্তুকি) দিতে হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘ওই ছাই লোকেরা চুরি করে পকেট ভরায়। ওই ছাইয়ের টাকা তো তোমরাই পেতে পার। ওই ছাই দিয়ে ইট তৈরি করতে পার। আরও অনেক কিছু হয়। তোমরা তা করছ না কেন? তোমাদের কাজ করতে হবে। ইনকাম বাড়াতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন