রক্তের ‘দাম’ ফেরানোর নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

কালনার সভায় শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘শুনছিলাম, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে রক্তের জন্য কেউ নাকি টাকা নিয়েছে। টাকা সে নিজে ফেরত দেবে। এটা সরকারি নিয়ম নয়। আপনারা জানেন, সরকার সব বিনামূল্যে দেয়।’’ 

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:১৪
Share:

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।—ফাইল চিত্র।

সরকারি নির্দেশের নামে কয়েক মাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের রক্ত দিতেও ‘প্রসেসিং চার্জ’ নেওয়া হচ্ছিল বর্ধমান মে়ডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’য় এ খবর প্রকাশের পরে, তা ফেরত দিতে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক সুদীপ ধীবরকে শো-কজ করা হয়েছে। তাঁকে কলকাতায় স্বাস্থ্য ভবনে ডেকে পাঠিয়ে কৈফিয়ত চাওয়া হবে বলেও দাবি স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের।

Advertisement

কালনার সভায় শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘শুনছিলাম, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে রক্তের জন্য কেউ নাকি টাকা নিয়েছে। টাকা সে নিজে ফেরত দেবে। এটা সরকারি নিয়ম নয়। আপনারা জানেন, সরকার সব বিনামূল্যে দেয়।’’

এ দিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ব্লাড ব্যাঙ্কের বাইরের দেওয়ালে সাঁটানো ‘প্রসেসিং চার্জ’-এর পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ তথা হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ বলেন, ‘‘যে কোনও কারণেই হোক, ব্লাড ব্যাঙ্কের তরফে ভুল হয়ে গিয়েছে। নথি অনুযায়ী, গত দু’মাস ধরে বেশ কিছু রোগীদের কাছে প্রসেসিং চার্জ নেওয়া হয়েছে।’’ সুদীপবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব আসেনি ‘মেসেজ’-এর।

Advertisement

২০১৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন স্বাস্থ্যসচিব ওঙ্কার সিংহ মিনা একটি নির্দেশ জারি করে সরকারি হাসপাতালে রোগীদের জন্য বিনামূল্যে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত দিতে বলেছিলেন। বর্ধমান মেডিক্যাল সূত্রের খবর, এ বছর ৭ জুলাই কেন্দ্র ও রাজ্য তাদের সাত পাতার একটি নির্দেশিকা পাঠায়। তার শেষ পাতায় স্পষ্ট বলা ছিল, ২০১৫-র জারি করা নির্দেশ বলবৎ থাকছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সুদীপবাবু দাবি করেছিলেন, নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, ‘ডোনার কার্ড’ না থাকলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের প্রয়োজনেও রক্ত দিতে টাকা নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে এ বার সে টাকাই ফেরানোর পালা।

হাসপাতালের দাবি, নামের তালিকা করা হচ্ছে। শীঘ্রই বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। ভুক্তভোগীরা হাসপাতালে এসে নথি দেখিয়ে টাকা ফেরত নিয়ে যাবেন। কিন্তু এত আগের ‘প্রসেসিং চার্জ’-এর রসিদ কি সবাই রেখেছেন? উৎপলবাবুর মন্তব্য, ‘‘একটি পদ্ধতি মেনে তো এগোতে হবে। মানবিক ভাবে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন