মেঘের দেশে: পাহাড়ের রাস্তায় মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে ফ্লেক্স। ছবি: বিশ্বরূর বসাক
ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে চলেছে রাত ন’টার দিকে। তখনও দার্জিলিঙে ভানু ভবনের সামনে ভিড়। মাথার উপরে মোর্চার হলুদ-সবুজ পতাকা। হাতের ব্যানারে ইংরেজিতে লেখা: ‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, গ্রিনফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ’। সৌজন্যে যুব মোর্চা। কিছুটা দূরে রাজভবনের সামনেও জমায়েত। সেখানে তৃণমূল সমর্থকরা।
প্রায় পৌনে ন’টা নাগাদ এসে পৌঁছল মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়। স্লোগান উঠল তাঁর নামে। গাড়ির গতি কমিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। হাত নাড়লেন হাজির মানুষের দিকে।
বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ বাগডোগরায় নামে মুখ্যমন্ত্রীর বিমান। দিনভর বৃষ্টি আর কুয়াশায় এক সময়ে শোনা গিয়েছিল, তিনি এ দিন পাহাড়ে না গিয়ে শিলিগুড়িতে থেকেও যেতে পারেন। কিন্তু তিনি শিলিগুড়িতে নামার আগেই আবহাওয়া কিছুটা পরিষ্কার হয়ে যায়। বাগ়ডোগরা থেকে মুখ্যমন্ত্রী যখন বার হচ্ছেন, তখন তাঁর সঙ্গী জিটিএ-র তত্ত্বাবধায়ক প্রধান বিনয় তামাং। সেখানেই জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁরা সোজা দার্জিলিং যাবেন।
প্রতিবারের মতো এ বারেও জায়গায় জায়গায় ছিল অভ্যর্থনা। রোহিনী মোড়, কার্শিয়াং, ঘুম, দার্জিলিং রেল স্টেশন-সহ রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় উৎসাহী মানুষের ভিড়ে দাঁড়িয়ে পড়ে কনভয়। কোথাও পাহাড়ের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ, কোথাও তৃণমূল বা মোর্চার সমর্থকরা মুখ্যমন্ত্রীর অভ্যর্থনায় রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে পতাকা নাড়ছিলেন। পাহাড়ের বেশ কিছু সংগঠন তাদের ব্যানার নিয়ে রাস্তায় উপস্থিত হয়েছিল।
পাহাড়বাসীদের একাংশ বলছেন, সব জায়গাতেই যে ভিড় হচ্ছে, তা মোর্চা এবং তৃণমূলের লোকজন। স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ক’জন আসছেন, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। উল্টো দিকে, বিনয় শিবিরের দাবি, দলের চেষ্টায় এত জায়গায় এত লোক আনা সম্ভব নয়। অনেকে নিজের উৎসাহেই আসছেন। ওই শিবিরের আরও বক্তব্য, এ বারে ভিড় করার আরও একটি বিশেষ কারণ রয়েছে। তা হল, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাপ্তি। যুব মোর্চার ব্যানারে যেমন সে কথা বলা হয়েছে, তেমনই দার্জিলিঙের স্থানীয় লোকজনেরাও একই সুরে কথা বলছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী রিতা তামাং যেমন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নিয়েছে। তাই এই অভ্যর্থনা ওঁর প্রাপ্য।’’
বিমল গুরুংয়ের খাসতালুকে এখন তাই কিছুটা হলেও পাল্টা হাওয়া।