প্রকল্প: মালদহের প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকেলে মালদহ দুর্গাকিঙ্কর সদনে অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি সেই ক্ষোভের কথা উগড়েও দেন।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, হাসপাতালের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণের কাজের জন্যই হাসপাতালে ধুলো জমছে, ছড়াচ্ছে দূষণ।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের ভিড় নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অনুযোগ, এই হাসপাতালে বিহার, ঝাড়খণ্ড এমনকী বাংলাদেশ থেকেও রোগীরা ভর্তি হন। নিজের রাজ্যের রোগীরাই পরিষেবা ঠিক ভাবে পাচ্ছেন না। অন্য রাজ্যের রোগীদের চিকিত্সার জন্য স্বাস্থ্য সচিব অনিল বর্মাকে আলাদা একটি প্রকল্প করারও এ দিন নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া, জেলার অন্য হাসপাতাল থেকে মেডিক্যালে রেফার কমানো ও মশাবাহিত রোগ মোকাবিলায় এ বার শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও সচেতনতায় জোর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
এ দিন মালদহ ডিএসএ মাঠে সরকারি সভা শেষ করে বেলা সওয়া তিনটে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী চলে যান মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিত্সাধীন কুশমণ্ডির দেহাবন্ধ গ্রামের নির্যাতিতার সঙ্গে তিনি দেখা করেন। এরপর হাসপাতাল থেকে সরাসরি চলে আসেন দুর্গাকিঙ্কর সদনে প্রশাসনিক সভায়।
সভার প্রথম দিকেই মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল প্রসঙ্গ উঠতেই মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেন, এদিন হাসপাতালে গিয়ে দেখেছেন পরিষেবা ঠিকঠাক থাকলেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কম। ওয়ার্ড তো বটেই, চত্বরে প্রচণ্ড ধুলো। তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কের কাজ হচ্ছে এবং রোগীদের ওয়ার্ডে ধুলো ঢুকছে। দুষণ হচ্ছে। জাতীয় সড়কের কাজ তো শেষই হচ্ছে না।’’ কবে সেই কাজ শেষ হবে তা নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যাও চান।
সে সময়ই সভায় থাকা ইংরেজবাজার পুরসভার পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষকে ডেকে বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজ থেকে ৫০ জনকে কাজে লাগিয়ে হাসপাতাল তিন বেলা করে সাফ করতে হবে। ছিটোতে হবে জল।’’ পাশাপাশি হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর উঁচু করারও নিদান দিয়েছেন।
রোগীর ভিড় নিয়ে সভায় বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের সুপার অমিত দাঁ। তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রীও।এদিকে মালদহ জেলার চাঁচল সহ বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের রেফার করা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। জবাবে স্বাস্থ্য সচিব অবশ্য জানিয়ে দেন যে গত দেড়-দুমাসে এই প্রবণতা কমেছে।