এ ভাবেই চলে হাট। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো মঙ্গলাহাটের স্থানান্তর নিয়ে উদ্যোগী হল হাওড়া পুর নিগম। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, এই হাটের জন্য হাওড়া ময়দান-সহ আদালত চত্বর ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এলাকা সপ্তাহে দু’দিন যে ভাবে যানজটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, সে ব্যাপারে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাস্তা ও ফুটপাথ দখল করে বসা ব্যবসায়ীদের ধাপে ধাপে অন্যত্র তুলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি যে বাড়িগুলিতে হাট বসে, সেগুলির অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে হাট মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুনের ২১ তারিখ হাওড়া শরৎ সদনে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠক করেন। দিনটা ছিল মঙ্গলবার। মুখ্যমন্ত্রী দেখেন, দু’পাশের ফুটপাথে পড়ে ব্যবসায়ীদের তক্তাপোষ, কাপড়ের গাঁট, অজস্র রিকশা ও ট্রলি ভ্যান। অথচ যে জায়গায় হাট বসেছে, তার চারপাশে রয়েছে মূল প্রশাসনিক ভবন, জেলাশাসকের বাংলো, জেলা আদালত, হাওড়া হাসপাতাল, পুর নিগম-সহ দু’টি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল ও মেয়েদের কলেজ। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকের প্রথমে হাওড়া পুর নিগমকে নির্দেশ দেন, হাট স্থানান্তর করা নিয়ে জেলা প্রশাসন ও হাওড়া সিটি পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে।
হাওড়ার পুর কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে পুরভবনে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, তিনটি ধাপে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুরসভা সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে প্রথম ধাপে পুরনো মঙ্গলাহাট বা পোড়া মঙ্গলাহাটের অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা-সহ বিক্রেতাদের তালিকা ও তাঁদের বসার জায়গার তথ্য হাট মালিকদের থেকে চাওয়া হবে। দ্বিতীয় ধাপে, ফুটপাথ বা রাস্তায় যাঁরা বেআইনি ভাবে বসেন, তাঁদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হবে। যাতে এলাকার যান চলাচল ব্যাহত না হয়। তৃতীয়ত, হাটে কাজ করা মুটে-মজুরদের পরিচয়পত্র তৈরি করতে হবে এবং হাটের মধ্যে তাঁরা যে ভাবে আগুন জ্বেলে রান্না করেন, তা বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, হাট মালিকেরা মঙ্গলবারই বিক্রেতাদের তালিকা পুর নিগমে জমা দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, শুধু নবীন মঙ্গলাহাটেই সোমবার বসেন ২৪২৭ জন ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার বসেন ১৭৯৫ জন। হাট মালিকদের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, এই ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঘরভাড়া রয়েছে মাত্র ৪৫৩ জনের। বাকি ব্যবসায়ীরা কী ভাবে বসেন, সেই তথ্য অবশ্য ওই তালিকায় দেওয়া নেই।
পুর কমিশনার বলেন, ‘‘একটা শহরের মূল কেন্দ্রস্থল সপ্তাহে দু’দিন যে ভাবে স্তব্ধ হয়ে যায়, তাতে হাট স্থানান্তর অত্যন্ত জরুরি। রাস্তা ও ফুটপাথের হাট আগে তুলতে হবে। টিকিয়াপাড়ায় ওঁদের বিকল্প ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।’’