এফডিআই প্রতিবাদে সরব তৃণমূল নেত্রীও

খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নিতে (এফডিআই) ছাড়পত্র দেওয়ার প্রতিবাদে কেন্দ্রে ইউপিএ সরকার থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে এখনও যে তাঁর নীতিগত আপত্তি রয়েছে তা বৃহস্পতিবার ফের স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ০৯:৫০
Share:

খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নিতে (এফডিআই) ছাড়পত্র দেওয়ার প্রতিবাদে কেন্দ্রে ইউপিএ সরকার থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে এখনও যে তাঁর নীতিগত আপত্তি রয়েছে তা বৃহস্পতিবার ফের স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

সম্প্রতি প্রতিরক্ষা, বিমান পরিষেবা, একটি ব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসা, ওষুধ উৎপাদন সহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির নিয়ম শিথিল করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ হল, কেন্দ্রের ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূলকে আগের মতো উগ্র বিরোধিতায় নামতে দেখা যায়নি। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূলের এই অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। এও জানতে চান, এ ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নীরব কেন? বিশেষ করে, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের জন্য যখন ওষুধের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বিরোধীদের এই প্রশ্নের মুখের পড়ে বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন মমতা। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলেন, বিদেশি লগ্নিতে ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের গৃহীত সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁর ঘোর আপত্তি রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘১০০ শতাংশ এফডিআই-এর অনুমতি দিলে এখানে উৎপাদন একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। ওষুধ এবং চাষের ক্ষেত্রে এফডিআই এলে আমাদের পক্ষে তা চাপের হবে।’’ বেসরকারি ওষুধ সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে এফডিআইয়ের সীমা বাড়িয়ে ৭৪ শতাংশ করার ফলে ভারতীয় শিল্প-বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে মত তৃণমূলের। একই ভাবে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে বিদেশি লগ্নি এলে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এ দেশের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন বলেও তৃণমূলের আশঙ্কা।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আরও বলেন, ‘‘এফডিআই এলে দেশজ পণ্যের বদলে বিদেশি পণ্যে বাজার ছেয়ে যাবে। এতে ভারতের ব্র্যান্ডগুলি নষ্ট হবে। তা ছাড়া ওষুধের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে যাবে। অত দাম দিয়ে এ দেশএর গরিব মানুষরা কিনতে পারবে না। একটা লোকও বাঁচতে পারবে না।’’ কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে তৃণমূল সাংসদরা যে সংসদেও সরব হবেন তাও এ দিন জানান মুখ্যমন্ত্রী।

তবে বিরোধীদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রতিবাদে আগের ঝাঁঝ নেই। তাঁদের মতে, অতীতে যে ভাবে এফডিআইয়ের বিরোধিতায় ইউপিএ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন তৃণমূলনেত্রী, সেই নিরিখে এ দিন মমতার বক্তব্য ছিল অনেকটাই ‘নিষ্প্রভ’। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, আসলে মমতা জানেন, প্রথমত তিনি এফডিআই নীতিতে সমর্থন করছেন না বিরোধিতা করছেন তার ওপর কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া আগের মতো নির্ভরশীল নয়। তা ছাড়া, প্রশাসনিক কারণেই এখন কেন্দ্রের সঙ্গে কোনও রকম সংঘাতে যেতে চান না মুখ্যমন্ত্রী। তাই এফ ডি আই নিয়ে তাঁর রাজনৈতিক আপত্তি এ দিন শুধু নথিভুক্ত করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে বিপ্লবে তাঁর আগ্রহ নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন