নির্যাতিতার পাশে দাঁড়াতে হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী

চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন, কিন্তু এখনও ওই যুবতীর সঙ্কট কাটেনি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, একে অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে, দেহের ভিতরে ক্ষতেরও নিরাময় হয়নি, তাই আরও অন্তত ৩৬ ঘণ্টা লাগবে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সামনেই জেলার কর্তাদের বলে গিয়েছেন, সব রকম ভাবে দক্ষিণ দিনাজপুরের দেহাবন্ধ হাটপাড়ার ওই যুবতীর পাশে দাঁড়াতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ ও রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:১২
Share:

বারবারই চোখ খুলে দেখার চেষ্টা করছিলেন, কে এসে দাঁড়িয়েছেন তাঁর পাশে। কিন্তু বারবারই চোখ বুজে যাচ্ছিল কুশমণ্ডির নির্যাতিতার।

Advertisement

সে কথা বুঝতে পারছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মঙ্গলবার মালদহে হঠাৎ করে নির্যাতিতাকে দেখতে তিনি হাসপাতালে চলে যান। মিনিট পাঁচেক তাঁর শয্যার পাশে দাঁড়িয়েও ছিলেন। কিন্তু এই অবস্থা দেখে ওই যুবতীর সঙ্গে আর কথা বলার চেষ্টা করেননি।

চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন, কিন্তু এখনও ওই যুবতীর সঙ্কট কাটেনি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, একে অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে, দেহের ভিতরে ক্ষতেরও নিরাময় হয়নি, তাই আরও অন্তত ৩৬ ঘণ্টা লাগবে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সামনেই জেলার কর্তাদের বলে গিয়েছেন, সব রকম ভাবে দক্ষিণ দিনাজপুরের দেহাবন্ধ হাটপাড়ার ওই যুবতীর পাশে দাঁড়াতে হবে।

Advertisement

কিন্তু দু’দিন আগে বিকেলে ইছামতী সেতুর নীচে থেকে তাঁকে উদ্ধারের পরে যে ভাবে চিকিৎসা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েছে প্রশাসন। শনিবার সন্ধেয় ইটাহারে শিবরাত্রির মেলায় গণধর্ষিতা হন ওই যুবতী। তাঁর যৌনাঙ্গে ধাতব কিছু দিয়ে আঘাতও করা হয়েছে। সেই অবস্থাতেই পড়ে ছিলেন পরের দিন বিকেল পর্যন্ত। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে কাছেই গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচারও করা হয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, রায়গঞ্জে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও কেন সেই রাতেই তাঁকে মালদহ মেডিক্যালে পাঠাতে হল? প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচারের মাত্র দশ মিনিটের মধ্যেই ওই যুবতীকে ৭২ কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে পাঠানো হয়। কেন চিকিৎসকদেরই সেখানে নিয়ে আসা হল না?

রায়গঞ্জ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই যুবতীর যৌনাঙ্গ থেকে শরীরের ভিতরের কিছু অংশ বেরিয়ে এসেছিল। দীর্ঘক্ষণ বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকায় তাতে পচনও ধরে যায়। এতটাই কাহিল ছিলেন যে, তাঁকে অস্ত্রোপচারের সময় পুরো অবশও করা যায়নি। লোকাল অ্যানাসথেসিয়া দিয়ে অতি যত্নে সেই অংশগুলি কেটে বাদ দিয়ে বাকি অংশ জোড়া হয়। আর তার পরে দরকার ছিল অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ। মালদহ থেকে তাঁদের আনতে যত ক্ষণ লাগত, তার চেয়ে অনেক কম সময়ে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া গিয়েছে যুবতীকে। যদিও এই যুক্তি অনেকেই মানতে নারাজ।

বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী দক্ষিণ দিনাজপুরে যাবেন। তার আগেই এই ঘটনায় সব অভিযুক্তকেই গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ। রামপ্রবেশ শর্মার পরে মঙ্গলবার আরও এক স্থানীয় বাসিন্দা আন্ধারু বর্মনকে ধরা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন