রূপা বাগচী ও কনীনিকা বসু ঘোষ
ন’বছর হয়ে গেল, আর নয়!
গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক পদে এ বার নতুন মুখ আনতে চাইছেন সিপিএম রাজ্য নেতৃত্ব।
তিনি কে? আগামী ১১ তারিখ থেকে মহিলা সমিতির তিন দিনের রাজ্য সম্মেলন হবে শিলিগুড়িতে। শেষ মুহূর্তে কৌশলে কোনও বদল না হলে সেখানেই নতুন নাম চূড়ান্ত হওয়ার কথা। তবে সিপিএমের একাধিক সূত্রের মতে, সম্ভাব্য হিসাবে উঠে আসছে দুটি নাম। রূপা বাগচী এবং কনীনিকা বসু ঘোষ। রূপা বর্তমানে সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদকমণ্ডলী এবং রাজ্য কমিটির সদস্য। আর কনীনিকা এখন দলের শুধু কলকাতা জেলা কমিটিতে রয়েছেন।
দলের বিভিন্ন গণসংগঠন এবং জেলা সম্পাদক পদে নতুন মুখ আনার সিদ্ধান্ত সিপিএমে ইতিমধ্যেই হয়েছে। গণসংগঠনগুলিকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেওয়ার সিদ্ধান্তও দলে আগে থেকেই রয়েছে। গণসংগঠনগুলিকে আরও বেশি আন্দোলনমুখী করে তোলাই এই সিদ্ধান্তগুলির উদ্দেশ্য। সিপিএম নেতৃত্ব বিভিন্ন বিষয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনে দলকে রাস্তায় নামাতে চাইছেন। সে জন্যই তাঁরা এমন মুখকে সামনে আনতে চান, যাঁদের মধ্যে লড়াইয়ের জেদ রয়েছে। মহিলা সমিতির সম্ভাব্য রাজ্য সম্পাদক হিসাবে রূপা ও কনীনিকার নাম উঠে এসেছে মূলত সেই কারণেই। তা ছাড়া, বর্তমানে মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক মিনতি ঘোষ তিন বার অর্থাৎ ন’বছর ধরে ওই পদে রয়েছেন। তাই তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া অনিবার্য হয়ে উঠেছে বলেও দলীয় সূত্রের দাবি।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, দলের নিয়ম অনুযায়ী যিনি গণসংগঠনে নেতৃত্ব দেবেন, তিনি সর্বক্ষণের জন্য দলকে সময় দেবেন, সেটাই বাঞ্ছনীয়। রূপা এবং কনীনিকা উভয়েই এই পদের জন্য যোগ্য হলেও ওই দিক থেকে রূপা কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন। কারণ, তিনি সর্বক্ষণের কর্মী। কিন্তু কনীনিকা স্কুল শিক্ষিকা। স্কুলে তাঁকে যথেষ্ট সময় দিতে হয়। ফলে তিনি মহিলা সংগঠনে পুরো সময় দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বের এক প্রস্ত কথাও হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে রূপা ও কনীনিকাকে প্রশ্ন করা হলে তাঁরা আগাম কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বরং উভয়েরই বক্তব্য, যা আলোচনা, তা শিলিগুড়ির সম্মেলনেই হবে।
তবে শুধু মহিলা সমিতির নেত্রী বাছাই-ই নয়, সিপিএম সূত্রে খবর, ইদানীং কালে দলের এই গণসংগঠনকে কেন বিশেষ আন্দোলনে নামতে দেখা যায় না, তা নিয়েও আলোচনা হবে রাজ্য সম্মেলনে। দলের রাজ্য স্তরের এক নেত্রীর বক্তব্য, হিসাব করে দেখা গিয়েছে, মহিলা সমিতিতে নতুন সদস্য বিশেষ হচ্ছে না। যাঁরা সদস্য হচ্ছেন, তাঁদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বিশেষ পাওয়া যাচ্ছে না। তার কারণ বেশির ভাগ মহিলা নানা পেশায় যুক্ত। ফলে কাজ ছেড়ে ধারাবাহিক আন্দোলনে বা মিছিলে-মিটিংয়ে তাঁরা বিশেষ আসতে চাইছেন না। এই সব বিষয়ের সমাধানের পথও খোঁজা হবে শিলিগুড়িতে।