kali Puja 2022

সন্দীপদের সঙ্গে হাতে হাতে পুজোর কাজ করেন সালামেরা

খাগড়ার এই পাড়ায় এমনই সুর বাঁধা রয়েছে বহু কাল ধরে। এখানে সরু এক ফালি রাস্তার দুই পাশে দু’টি ধর্মস্থান। এই এলাকায় বাস করতেন বিখ্যাত বালাপোশ শিল্পী সাখাওয়াত হোসেন খান।

Advertisement

বিদ্যুৎ মৈত্র

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৩৯
Share:

কালীপুজো। ফাইল চিত্র।

কালীপুজোর রাতে বহরমপুর খাগড়া চৌরাস্তার স্বর্গধাম মাতৃমন্দিরের কালীপুজোর কাজে সঞ্জয় চন্দ্র, সন্দীপ আঢ্য, অভীক চৌধুরীদের সঙ্গে হাত লাগান জাব্বার শেখ, সালাম শেখ, চন্দন ইসলাম। কালীপুজোর আগে থেকেই শুরু হয় কাজ। সাজানো হয় মন্দিরটি। পুজোর দিন সূর্যাস্তের পরে মন্দিরে প্রতিমা আনা হয়। সোমবার কাঁধে করে সেই প্রতিমা বয়ে এনেছেন সন্দীপ, জাব্বাররা। রাতে পুজো। তার পরে ভোগ। সকলকেই বসিয়ে ভোগ খাওয়ানো হয়। সঞ্জীব শেখ বলেন, ‘‘এখানে কোনও ভেদাভেদ নেই। পাড়ার সকলেই যেমন ভোগ খেতে আসেন, তেমন ভোগ পরিবেশনেও আমরা সবাই হাত লাগাই।’’

Advertisement

খাগড়ার এই পাড়ায় এমনই সুর বাঁধা রয়েছে বহু কাল ধরে। এখানে সরু এক ফালি রাস্তার দুই পাশে দু’টি ধর্মস্থান। এই এলাকায় বাস করতেন বিখ্যাত বালাপোশ শিল্পী সাখাওয়াত হোসেন খান। তাঁর স্ত্রী চাঁদ বেওয়া বলেন, “আমরা এখানে সবাই মিলেমিশে বাস করি। আশি বছর ধরে এই পরম্পরা দেখে আসছি।” প্রবীণ সরাফত হোসেনও এখানেই বড় হয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমরা ছোটবেলা থেকে এই ক্লাবের পুজোর সঙ্গে জুড়ে রয়েছি।” এই মন্দিরের সামনে বহু পুরনো দর্জির দোকান রয়েছে মহম্মদ সফিদের। সফি বলেন, “বছর ভর মন্দির কিংবা ইদগাহের রক্ষণাবেক্ষণ করি সকলে মিলে। যে কোনও আনন্দে বা বিপদেও আমরা পাশে থাকি।’’ এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে পাড়ার সকলে ছুটে আসেন। অরুণ হালদারের বক্তব্য, ‘‘আমরা যে এক সঙ্গে বড় হয়েছি। ইদের সময় চাঁদা তোলা থেকে শুরু করে ইফতারের আয়োজনে সবাই হাত লাগাই।’’

বহরমপুরের দশ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অভীক চৌধুরী ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি বলেন, “এলাকার কোনও প্রয়োজনে যখনই চাঁদা তুলতে হয়, তখন সবাই এগিয়ে আসেন। কাউকে কখনও না বলতে দেখিনি।’’ খাগড়া চৌরাস্তার মোড়ের বড় মসজিদের উল্টো দিকে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান স্বর্গধাম সেবা সমিতির পাঠাগার। গ্রন্থালয়টির জন্মলগ্ন থেকেই কালীপুজো হয়ে আসছে। পরে সেখানেই প্রতিষ্ঠিত হয় স্বর্গধাম কালী মন্দির।

Advertisement

জাব্বার বলেন, ‘‘নিয়ম মতো সূর্যোদয়ের আগেই বিসর্জন করতে হবে। প্রতি বারের মতো আমরা সবাই হাত লাগাব।’’ জেলার ইতিহাসচর্চাকারী রমাপ্রসাদ ভাস্কর বলেন, “বহরমপুরের মতো প্রাচীন জনপদে এই সম্প্রীতি আমাদের অহঙ্কারের।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন